সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ফসলের মাঠ জুড়ে হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৌচাষিরা। মৌ-বাক্সে মৌমাছির দল সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে মগ্ন। মৌচাষিরা বলছেন, এ বছর সরিষার ভালো চাষ হওয়ায় মধু আহরণও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে আসা মৌচাষি আব্দুল আলিম জানান, কাঠের বাক্সের ভেতরে মোম দিয়ে তৈরি ছয় থেকে সাতটি ফ্রেমে রাখা হয় একটি রানি মৌমাছি। রানির আকর্ষণে পুরুষ মৌমাছিরা সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে সেই ফ্রেমে জমা করে। তাড়াশে সরিষা ক্ষেতের পাশে ১৩০টি বাক্স বসিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ মণ মধু সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই মধু স্থানীয় পাইকাররা ৩০০-৪০০ টাকা প্রতি কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে তাড়াশে ১০,৩০৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষা ক্ষেতের পাশে তিন হাজার ৭৫০টি মৌ-বাক্স বসিয়ে ৩,৫০০ লিটার মধু সংগ্রহ করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মৌমাছি চাষ সরিষার ফলন ১০ শতাংশ বাড়ায়। ফলে একদিকে মৌয়ালরা মধু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে সরিষার উৎপাদনও বেড়ে যাচ্ছে।
সরিষা ফুল থেকে সংগৃহীত মধু স্বাদ ও গুণগত মানে অনন্য। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এই মধু দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে, এমনকি বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।
মৌ চাষ শুধু কৃষকদের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস নয়, বেকারত্ব দূর করতেও ভূমিকা রাখছে। কৃষি বিভাগ ও মৌচাষিদের সমন্বয়ে এ ধরনের উদ্যোগ তাড়াশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে।
কেকে/এএম