শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচার বিভাগ নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় ভোগান্তির শিকার হয় অসংখ্য মানুষ। তাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দাবি উঠে ন্যায় বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের। এসবের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন।
আদালত পরিদর্শন, মতবিনিময়সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় ১৩ হাজার মানুষের মতামত নিয়ে ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ৮ সদস্যের সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী- প্রধান বিচারপতি, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগসহ বেশ কিছু প্রক্রিয়ায় আনা হচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন।
পূর্বে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কিংবা অন্য কারো পরামর্শে একক সিদ্ধান্ত নিতেন রাষ্ট্রপতি। তবে কমিশনের প্রস্তাব- আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারপতিকে করা হবে প্রধান বিচারপতি। যা থাকতে হবে সংবিধানের লিখিত রুপে।
অন্যান্য বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্য পৃথক কমিশন গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে ১০ পৃষ্ঠার এই প্রস্তাবনায়। বলা হয়েছে- বিদ্যমান সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রধান বিচারপতি এবং নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বিচারক নিয়োগের পরিবর্তে সুপ্রীম কোর্ট জাজেস এপোয়েনমেন্ট কমিশন গঠন করে মেধা, সততা ও দক্ষতা মূল্যায়র করা হতে পারে। ৯ সদস্যের এই কমিশনে নেতৃত্ব দিবেন প্রধান বিচারপতি।
সুপারিশপত্রে হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক নিয়োগে ৬ সদস্য ও আপিল বিভাগের ৪ সদস্যের কমিশন গঠনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ যেন বিচার বিভাগের ওপর কোন হস্তক্ষেপ করতে না পারে সে বিষয়কেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এ প্রস্তাবনায়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতে রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই সর্বোচ্চ আদালত এবং জেলা আদালতে সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য স্থায়ী অ্যাটর্নী সার্ভিস গঠন এবং ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাধীন তদন্ত সংস্থা গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরপেক্ষ জনবল কীভাবে নিয়োগ দেওয়া যায় সে ব্যাপারে দীর্ঘ দিনের প্রচলিত পদ্ধতি পরিবর্তনের সুপারিশ আসতে পারে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।
এছাড়া, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসতে পারে বলে জানা গেছে।
কেকে/এজে