চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন ফি কমানো, পোষ্য কোটা বাতিল, চাকসু নির্বাচন ও নির্মিত হলের আসন বরাদ্দসহ ৯ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর ২০২৪) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যনারে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় ছাত্র ফেডারেশনের পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের ১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আজাদ হোসেন বলেন, আমরা আশা করেছিলাম আমরা যে বৈষম্যবিরোধী চেতনা নিয়ে জুলাই মাসে স্বৈরাচারী হাসিনার পেটাও বাহিনীর সামনে বুক পেতে দিয়েছিলাম সেই বৈষম্য বিরোধী আশাকাঙ্খার জায়গা থেকে প্রশাসন বৈষম্যযুক্ত সকল ব্যবস্থা বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ায় ভূমিকা রাখবেন। কিন্তু আমার দেখলাম গত ২৭ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১,০০০ টাকা যেটা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে নির্ধারণ করে দেওয়া আবেদন ফি এর সমান। তাহলে এত শহিদের রক্তের ভূমিকা কোথায়? এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বানিজ্য যা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত করার অপচেষ্টা চলছে তা আমরা রুখে দেবো। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী গুপ্ত হামলা শিকার হয়েছেন কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যপারে সুষ্ঠু তদন্ত করতে পারেনি এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে পারেনি।
মানববন্ধনে স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে ক্রিমিনোলোজি ও পুলিশ সায়েন্স বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের ছাত্র আবির বিন জাবেদ বলেন, আগামী ১ তারিখে আবেদন কার্যক্রম শুরুর পূর্বেই প্রশাসন আমাদের দাবিগুলো বিবেচনা করে নতুন করে আবেদন ফি ২০০ টাকা করে পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেবে। তা না হলে আমরা আবারও টানা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
এ সময় তিনি আরও বলেন যদি চাকসু চালু থাকত তাহলে এসব বিষয়ে আমাদের আন্দোলনের প্রয়োজন ছিল না। ছাত্র প্রতিনিধিরা প্রশাসনের কাছে এসব বিষয়ে জবাবদিহিতা চাইত। তাই তিনি অবিলম্বে চাকসু নির্বাচন এর দাবি জানান। এরপর তিনি সকলের সামনে ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো:
১) ভর্তি আবেদন ফি ২০০ টাকা করতে হবে।
২) মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা, পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে।
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করতে হবে।
৪) বন্ধ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা, বাড়ির দূরত্ব এবং মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ ও অতিদ্রুত নতুন দুইটি হল নির্মাণ করতে হবে।
৫) ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল এক্সট্রা কারিকুলার সংগঠনসমূহকে অফিস বরাদ্দ দিতে হবে।
৬) অনতিবিলম্বে টিএসসি নির্মাণ করতে হবে।
৭) অতি দ্রুত চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
৮) প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইনভিত্তিক করতে হবে।
৯) সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্তহামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে অন্যান্যদের মাঝে শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের ১৬-১৭ সেশনের আরিফ মইনুদ্দিন, ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সাইন্স বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের তৌহিদুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের ১৬-১৭ সেশনের জালাল উদ্দিন মিসবা, প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদ মোহাম্মদ রিদওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি রোনাল চাকমা, স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
কেকে/এএম