বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা চুরি করে সব কিছু পাচার করে দিয়েছেন। ধ্বংস করে ফেলেছে দেশের অর্থনীতিকে। বিকিয়ে দিয়েছে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব। অথচ চোরের মায়ের ডাঙ্গর গলার মত করে তারা স্বাধীনতার ঠিকাদার সেজে চেতানার নামে জাতিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে সব লুটে পুটে নিজেদেরকে পুষ্ট করেছে। কিন্তু তাদের চেতনাবাজী নতুন প্রজন্মের কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় তাদের শুধু পতনই হয়নি, দেশ থেকেই বিতারিত হয়েছে।
রোববার (২৯) রাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দপুর উপজেলা ও শহর জামায়াত আয়োজিত পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, নীলফামারী জেলা আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার।
সৈয়দপুর উপজেলা আমীর হাফেজ আব্দুল মুনতাকিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী আলহাজ্ব মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শিল্পপতি রাজ কুমার পোদ্দার রাজু, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যাপক মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, নায়েবে আমীর অধ্যাপক ড. খায়রুল আনামসহ স্থানীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশকে আমরা সাজানো বাগান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া দেশকে আবার সমৃদ্ধ ও কল্যাণমুখী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন আমরা এমন একটা দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোন বৈষম্য থাকবেনা। সকল ধর্মের সকল বর্ণের মানুষ মিলেমিশে সমান অধিকারের ভিত্তিতে বসবাস করবে। সর্বক্ষেত্রে দেশাত্ববোধের মাধ্যমে দেশকে উন্নত করতে সচেষ্ট থাকবে। কোন চাঁদাবাজ, দুষ্কৃতিকারী, দূর্নীতিবাজ থাকবেনা। কেউ কোনভাবে অন্যায়ের শিকার হবেনা। কল্যাণমুখী এমন দেশ গঠনের মাধ্যমে কল্যাণ রাষ্টের মডেল উপস্থাপন করা হবে।
কৃষকরা ফসল ফলাবে দেশকে সহযোগিতা করতে এবং দেশের মান উন্নত করতে। কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তাঁর প্রতিষ্ঠান কেড়ে নেয়া হবেনা। কাউকে জুলুমের মাধ্যমে দমিয়ে রাখা হবেনা। শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে সমান্তরাল সমৃদ্ধ করে জাতিকে সাজানো বাগানের মতো দেশ উপহার দেয়া হবে।
এজন্য তিনি উপস্থিত সকলে সহযোগিতা কামনা করে বলেন, চব্বিশের তরুণ যোদ্ধারা যে লক্ষ্য ও চেতনা নিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতাকে নস্যাৎ করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে পতিত স্বৈরাচার। সর্বশেষ তারা সচিবলায়ে অগ্নিকান্ড ঘটিয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র ধ্বংস করেছে। এই ঘটনার সাথে যারাই জড়িত তাদের মুখোশ উম্মোচন করে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে।
একইভাবে তিনি জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার দাবি করেন। সেই সাথে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি ১৭ বছর পর্যন্ত ভোটার করার প্রস্তাব বাস্তবায়নেরও দাবি জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, শিশু-কিশোর ও যুবকরাই আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। তাই তাদেরকে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিয়ে আমরা কিছুটা হলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের প্রতি আমাদের দায় শোধ করতে পারি। এব্যাপারে যারা বিরোধিতা করছে তাদেরকে শুধরানোর আহ্বান জানান তিনি।
সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, যারা আয়না ঘরের প্রতিষ্ঠা করে, জাতিকে দুঃসহ অপশাসনে নিপতিত করে দেশকে বিক্রির পায়তারা করেছিল তাদের জাতি আর কখনই ফিরতে দিবেনা। ফ্যাসিবাদ বিদায় হয়েছে তা চিরদিনই এদেশ থেকে বিতারিত থাকবে। আওয়ামীলীগ তাদের দোষ স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এ প্রজন্ম তাদের বিরুদ্ধেই থাকবে।
কেকে/এআর