শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫,
২৭ পৌষ ১৪৩১
বাংলা English

শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: ক্ষমতার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় বাড়ছে রাজনৈতিক অনৈক্য      বাড়তি ব্যয় চাপছে ভোক্তার ঘাড়ে, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরাও      পালিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাবেক ওসি শাহ আলম      শমী কায়সারের ব্যাংকের সবধরনের হিসাব তলব      যানজটের কারণে জনগণের কাছে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ      লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন      ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি      
গ্রামবাংলা
বাজারে ধানের দাম চড়া, সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে কৃষকের অনীহা
মোঃ মোকাররম হোসাইন, কালাই(জয়পুরহাট)
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:০৩ পিএম  (ভিজিটর : ৬২)
ছবি: প্রতিনিধি

ছবি: প্রতিনিধি

জয়পুরহাটের হাট-বাজারে ধানের দাম বেশী হওয়ায় আমন মৌসুমে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যেতে বসেছে। ধানের দাম প্রতিমণে (৪০ কেজি) ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে বাজারে ধানের দাম বাড়ার কারনে অন্যবারের মত এবার কোনো সিন্ডিকেট কাজে লাগাতে পারেনি বড় ব্যবসায়ীরা। ঝামেলা ছাড়াই কৃষক এবার লাভের মুখ দেখছেন।  
 
সরকার এবার জয়পুরহাটে কৃষকের কাছ থেকে ৩৩ টাকা কেজি দরে ৪ হাজার ৮৩৯ মে.টন ধান এবং ৪৭ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ৯ হাজার ৫৫৯ মে. টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে খাদ্য বিভাগ। স্থানীয় মিলাররা খাদ্য বিভাগের সাথে চাল দিতে চুক্তিবদ্ধও হয়েছে। যারা চুক্তবদ্ধ হননি তারা কাল তালিকাভূক্ত হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) পর্যন্ত জেলায় ধান সংগ্রহ হয়েছে ৮১ মে. টন। আর চাল সংগ্রহ ৭ হাজার মে.টন। অভিযান চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।

জেলার বৃহত ধানের বাজার কালাই পৌর শহরের পাঁচশিরা বাজার, ক্ষেতলালের ইটাখোলা বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে এবার মৌসুমের শুরু থেকে বেড়েছে ধানের দাম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় এবার ৬৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন।

জেলার হাট-বাজারগুলোতে বর্তমানে ৪০ কেজি মোটা জাতের প্রতিমণ ধান ১৪০০-১৪৫০ টাকা, চিকন ১৬৫০-১৭০০ টাকা আর কাটারি ধান ১৯০০-১৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধান নিয়ে আসার আগেই রাস্তায় কৃষকরা যে দাম চাচ্ছে দরদাম না করে ব্যবসায়ীরা সেই দামেই কিনে নিচ্ছেন। বাজারে পৌছার আগেই তাদের ধান বিক্রি হচ্ছে। ফলে তাদেরকে আর সিন্ডিকেটে পরতে হচ্ছে না।  

জেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদনের পরেও ধান সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যেতে বসেছে। এ পর্যন্ত ধান বরাদ্দের ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ সংগ্রহ হয়েছে। আর চাল সংগ্রহ হয়েছে ৭০ শতাংশ। গুদামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশী হওয়ায় এবার কৃষকরা সরকারকে ধান দিচ্ছে না। তবে মিল মালিকরা তাদের লাইসেন্স ঠিক রাখতে এক প্রকার চাপে পরেই চাল দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ধানের লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছাতে এবার মুশকিল হবে জেলা খাদ্য দপ্তরকে।

ইটাখোলা বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা রেজাউল করিম বলেন, গুদামে ধান দিলে ৩৩ টাকা কেজি পাওয়া যাবে, আর বাজারে সেই ধান ৪০ থেকে ৪১ কেজি দরে বিক্রি করছি। গুদামে গেলে অনেক ঝামেলাও পোহাতে হয়। এত সবের দরকার কি। তার চাইতে এখন বাজার অনেক ভাল। ফরিড়ায়াদের দৌড়াত্মও নেই।  

শুক্রবার পাঁচশিরা বাজারে কথা হয় ধান ব্যবসায়ী আজাদ আলীর সাথে। তিনি বলেন, হাটে মোটা জাতের মণপ্রতি ধান (৪০ কেজি) ১৪৩০ টাকা, চিকন জাতের ১৬৪০ টাকা এবং কাটারি জাতের ১৯৫০ টাকায় কিনেছি। এতে প্রতিমণ ধানে গড়ে বেড়েছে ২০০-২৫০ টাকা।    

জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি লায়েক আলী জানান, নিজেদের ক্ষতি করে হলেও সরকারকে যথাসাধ্য চাল দিচ্ছি। না দিলে আমাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি রয়েছে। তবে, ধানের যে দাম, তাতে আমাদের নাভিশ্বাস উঠেছে চাল তৈরি এবং সরকারের কাছে দিতে। সরকার একটু বেশি রেট দিলে আমাদের জন্যে সুবিধা হতো।

পাঁচশিরা বাজারের মিলার আব্দুল মালেক জানান, হয় সরকার নির্ধারিত দাম বাড়াতে হবে, নতুবা বাজারে ধানের দাম কমতে হবে। তা না হলে গুদামে চাল দিয়ে লোকসান হচ্ছে। বর্তমান বাজারে সর্বনিম্ন ধানের কেজি পড়ে ৩৬ টাকা। এই দামে ধান কিনে চাল তৈরি করলে প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় ৫০-৫১ টাকা। কিন্তু সরকার নির্ধারণ করেছে ৪৭ টাকা। ফলে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা লোকসান গুণে চাল দিতে আগ্রহী নন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, সরকার নিদ্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশী। তাছাড়া আদ্রতা বেশি বলে আমরা সবার ধান নিতেও পারছি না। ১৪ শতাংশের ওপরে আদ্রতা গেলে আমরা ধান নিতে পারি না। কিন্তু কৃষকরা ১৭-১৮ শতাংশ আদ্রতার ধান নিয়ে আসে। তাছাড়া অনেক কৃষক ধান পরিষ্কার করেন না। মারাই দিয়েই বাজারে নিয়ে আসে, আর পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। আমাদের পক্ষে তা কেনা সম্ভব হয় না।

জয়পুরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন বলেন, এবার আমন মৌসুমে জেলায় কৃষকের কাছে ৩৩ টাকা কেজি দরে ৪ হাজার ৮৩৯ মে.টন ধান এবং ৪৭ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছে ৯ হাজার ৫৫৯ মে. টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। ধানের দাম বাজারে বেশী পাওয়ায় মুলত কৃষকরা গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহী। তবে চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জণ হবে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ধান বরাদ্দের ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং চাল ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয়েছে। তিনি আরও জানান, যারা এবার চাল দিতে চুক্তিবদ্ধ হননি, তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

জাল টাকার নোট দিয়ে পান-সিগারেট কিনতে গিয়ে আটক যুবক
জীবননগর সীমান্তে ৬৬লক্ষ টাকার ইয়াবা উদ্ধার
নিপুণকে সিলেট বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
অভিনেত্রী নিপুণকে সিলেট বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ
তীব্র শীতে কাপছে চুয়াডাঙ্গা, সর্বনিম্ন ৮.৫ ডিগ্রি

সর্বাধিক পঠিত

নিপুণকে সিলেট বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
লামায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার
পালিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাবেক ওসি শাহ আলম
গঙ্গাচড়ায় বাংলাদেশ স্কাউটসের ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত
বিদ্যুৎ না থাকলেও মিটারে বেশি বিল আসার কারণ জানাল বিএন্ডটি

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝