স্বামী মিটার রিডার আর স্ত্রী ইউপি সদস্য। তাই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এক অসহায় বৃদ্ধা নারীকে বিদ্যুৎ বঞ্চিত ও গৃহবন্দী করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফতেহপুর পূর্ব ইউনিয়নের সাহবাজকান্দি গ্রামের সুফিয়ার বাড়িতে গিয়ে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্বামী সন্তান হারা ৮০ বছর বয়সী এক অসহায় সুফিয়ার মানবেতর জীবনযাপনের কথা। নেই তার সন্তান সন্ততি। একটি মেয়েকে দত্তক এনে করেছেন লালন পালন তাকে বিয়ে দিয়েছেন এখন সে একা। একটি চৌচালা টিনের ঘরে বসতি। নেই বিদ্যুৎ, থাকতে হয় অন্ধকারে। রাতের খাবার ও নামাজ পড়ি মোমবাতি ও কুপি দিয়ে।
কারণ জানতে চাইলে সুফিয়া কান্না কন্ঠে জানান, আমি অসহায়। আমার অংশীদারদের সম্পত্তি প্রতিবেশী দেবর পুত্র খোরশেদ আলম ও তার ভাইয়েরা ক্রয় করে। এখন আমার সম্পত্তি জোর করে দখল করার চেষ্টা করছে। বাড়ির রাস্তায় বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রেখেছ। কোথাও বের হতে পাড়ি না।
তিনি আরও বলেন, ২০ বছর আগে এই গ্রামে বিদ্যুৎ এলেও একমাত্র আমার ঘরেই নেই বিদ্যুৎ। যতবার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করি ততবারই নানা অজুহাতে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগে বাধা দেয়। মৃত্যুর আগে একটু বিদ্যুতের আলো দেখে যেতে চাই।
মানবেতর জীবন যাপন কারী সুফিয়া আরও বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়া ও বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী খোরশেদ গংরা।
স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মিমাংসার চেষ্টা করলে খোরশেদ আলম আদালত মামলা আছে বলে বিষয়টি এরিয়ে যায়।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খোরশেদ আলম একজন মামলাবাজ লোক। সে নারায়ণগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে মিটার রিডার হিসেবে কর্মরত আছে। কি ধরনের অভিযোগ দিলে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস নতুন সংযোগ লাইন দিবেনা সে বিষয়টি জেনেই সে ঐধরনের অভিযোগ করে সুফিয়াকে বিদ্যুৎ বঞ্চিত করে রেখেছে। এছাড়াও তার স্ত্রী সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হওয়ায় একটা প্রভাব বিস্তার করছে। স্থানীয়রা জানায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় সকল কর্মকাণ্ডে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে স্ত্রীকে নির্বাচিত করেছে। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর এখন আবার বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
খোরশেদ আলমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সুফিয়া যে জায়গায় বাসবাস করছে সেই জায়গা নিয়ে কোর্টে একাধিক মামলা রয়েছে এই জায়গা আমার।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একি মিত্র চাকমা বলেন, বিষয়টি জেনে খুবই মর্মাহত। পল্লী বিদ্যুতকে অফিসকে বলেছি বিষয়টি দেখার জন্য।
পল্লী বিদ্যুতের এজিএম রায়হানুল ইসলান বলেন, পত্রিকায় নিউজ হওয়ার পর আমি সুফিয়ার বাড়িতে গিয়েছি। যেহেতু আদালতে একাদিক মামলা রয়েছে তাই বিষয়টি একটু জটিল। তারপরও চেষ্টা করছি সুফিয়াকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রবিউল হক বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এআর