কবি গবেষক ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, জনগনই সকল ক্ষমতার অধিকারী। তাই জনগণের সম্মতি ছাড়া কেউ নিজেকে শাসক হিসেবে দাবি করতে পারে না। জনগণের অনুমতি ছাড়া কোন আইন পাশ হতে পারে না। এটাকেই বলে জনগণের ক্ষমতা ও গণস্বার্বভৌমত্ব। যে কোন বিষয়ে জনগণ যদি নিজের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসতে পারে, সেটাই আমাদের সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।
তিনি বলেন, স্বৈরশাসক ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন পাশ করেছে, সংবিধান বদলে দিয়েছে। সবকিছু বদলে দিয়ে তিনি নিজের নামে রাষ্ট্রের নামকরণ করেছে। এটা কি তিনি করতে পারেন? উত্তর হচ্ছে, না। যদি গণ-স্বার্বভৌমত্ব থাকে তাহলে এটা তিনি করতে পারেন না। জনগণের পরামর্শে কাজ করতে হবে। এটা যেই সরকার করবে না, সেই সরকারের ভাগ্য স্বৈরশাসকের মতো হবে। আর জনগণ যখন এ বিষয়ে সোচ্চার থাকে, তখনই কথা বলে, সমাধান করতে চায়। তার ব্যর্থয় ঘটলে জনগণ গণঅভ্যুত্থান ঘটায়।
সোমবার(৩০ ডিসেম্বর) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিলকিছ আলম পাঠাগারের উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সমাজ গঠন ও বই পড়া প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ড. ইউনুছ সাহেব গণ অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় এসেছেন। গঠন করেছেন অনেকগুলো কমিশন। কমিশনের লোকেরা উপরে বসে বসে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্কারের প্রস্তাবনা করছেন। এদের কাদের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে। জনগণ তাদের সঙ্গে কতটা উপস্থিত। উত্তর হলো, না। আপনাদের(জনগন) জিজ্ঞাস করছিল? চৌদ্দগ্রাম উপজেলার হিসেবে কি সমস্যা, কুমিল্লা জেলা হিসেবে কি সমস্যা? তারা কি জানতে চেয়েছে? এভাবে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার সমাজ সংস্কার করতে পারে না। তারা জনগণের অভিপ্রায় থেকে বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে।
কোমাল্লা ইবতেদায়ী স্বতন্ত্র মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান মাওলানা মোহাম্মদ নুরুল আলম খানের সভাপতিত্বে ও কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক এইচ আর হারুন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক সাহাব উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আগা আজাদ চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ফরায়েজী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম মীর হোসেন।
আলোচক হিসেবে ছিলেন কবি, গবেষক ও সাংবাদিক ড. কাজল রশীদ শাহীন, মোহাম্মদ রোমেল, শিশু সাহিত্যিক মামুন সারওয়ার, লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফেনী সিটি কলেজের প্রভাষক এয়াছিন পাটোয়ারী। কবিতা আবৃত্তি করেন কবি আমজাদ হোসেন, আবৃত্তি ছড়াকার জয়নাল আবেদীন জয়, কাজী মাঈন উদ্দিন, আহসান উল্লাহ।
এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
কেকে/এইচএস