মানবসেবা ও সমাজ উন্নয়নের এক অনন্য উদাহরণ ডা. মো. বখতিয়ার। একজন স্বপ্নদ্রষ্টা তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন -সঠিক দৃষ্টি ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে মানুষের জীবনকে পরিবর্তন করা সম্ভব। অসীম ইচ্ছাশক্তি, দূরদর্শিতা ও সেবার মানসিকতা তাকে শুধু একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নয় বরং একজন মানবপ্রেমিক হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বহু গুণে গুণান্বিত এ মানুষটির আজ জন্মদিন। বিশেষ এ দিনটিকে ঘিরে শুভাকাক্সক্ষীদের মাঝে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা গেছে।
ডা. বখতিয়ার তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন একটি সম্মানজনক সরকারি চাকরির মাধ্যমে। তবে তার অন্তরে লালিত ছিল একটি স্বপ্ন -মানুষের জন্য কিছু করা। এমন কিছু যা তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। ২০১৩ সালে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে তিনি প্রথম পদক্ষেপ নেন। সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা ত্যাগ করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘খাজা বদরুদদোজা মডার্ন হাসপাতাল’। যা ছিল একটি ছোট পরিসরের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। তবে তার এ যাত্রার শুরুটা সহজ ছিল না। সীমিত সুযোগ-সুবিধা, সীমিত অর্থায়ন -সবকিছু সত্ত্বেও তার আত্মবিশ্বাস ছিল অটুট। তার লক্ষ্য ছিল একটি এমন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা; যেখানে সাধারণ মানুষও সুলভমূল্যে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পেতে পারে। সময়ের ব্যবধানে আজ সেই হাসপাতাল একটি আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ৫০ শয্যার সরকারি অনুমোদিত এ প্রতিষ্ঠানটি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরের মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু। হাসপাতালে রয়েছে -শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দক্ষ নার্স ও প্রশিক্ষিত জনবল। যারা প্রতিদিন শত শত রোগীকে সেবা প্রদান করছেন।
ডা. বখতিয়ার স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি শিক্ষা ও অন্যান্য সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে -খাজা বদরুদদোজা স্কয়ার হাসপাতাল, খাজা বদরুদদোজা সাউথ ব্রিজ স্কুল, খাজা বদরুদদোজা মডেল স্কুল, মডার্ন হজ ট্রাভেলস্, মডার্ন বায়োটেক ও এপেক্স ট্যুরিজম। এ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলোকিত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষা নয় বরং নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলি শেখানো অন্যতন উদ্দেশ্য। মডার্ন হজ ট্রাভেলস্-এর মাধ্যমে তিনি হজযাত্রীদের জন্য একটি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং সুবিধাজনক ভ্রমণ নিশ্চিত করেছেন।
ডা. বখতিয়ার তার প্রতিটি উদ্যোগে সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ব্যবসার জন্য নয়; বরং মানুষের কল্যাণে অবদান রাখার জন্য প্রতিষ্ঠিত। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য তিনি সব সময় এগিয়ে আসেন। বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান, শিক্ষাবৃত্তি ও অসচ্ছল পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তা তার কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সফলতার আড়ালে যিনি: কবি বলেছেন -‘কোনকালে একা হয়নিকো জয়ী, পুরুষের তরবারী; প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়াছে, বিজয়ালক্ষী নারী’। কবি কাজী নজরুলের সেই পক্তি ডা. বখতিয়ারের জীবনেও বাস্তবায়ন ঘটেছে। তার এ সফলতার পেছনে যার অবদান সব চাইতে বেশি; তিনি হচ্ছেন তার অর্ধাঙ্গিনী ডা. রুমা আক্তার। এ দম্পতি পারিবারিক জীবনে সুমাইয়া সাইয়ারা রোদেলা ও সামিরা সাইকা রায়না নামে দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। সর্বোপরি, ডা. মো. বখতিয়ার তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম ও মানবসেবার মানসিকতা দিয়ে সমাজের মানুষের জন্য যা করে চলেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তার জীবন ও কর্ম হোক আগামী প্রজন্মের জন্য আলোকবর্তিকা -শুভাকাক্সক্ষীদের এটাই প্রার্থনা।