ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৯তম আসরের পর্দা উঠলো পূর্বাচলের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে। অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সকাল ১০টায় মেলা প্রাঙ্গণে উপস্থিত থেকে বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করার পর দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও দেখা মেলেনি ক্রেতা দর্শনার্থীদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিভিশন সেন্টারে এবারের মেলার প্রবেশ গেইট জুলাই-আগষ্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের আদলে সাজানো হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচীব আনোয়ার হোসেন জানান, এবারের মেলায় তরুণদের জন্যে বিনোদনসহ জুলাই আন্দোলনের চেতনা ও মিলনমেলার সব আয়োজন রাখা হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচীব আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, বাণিজ্য মেলা দেশী বিদেশী ক্রেতা বিক্রেতা পন্য প্রদর্শনী আর সম্পর্কের মেলবন্ধন। এবার তারুন্যের চেতনা, তাদের অবদান, সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে গত জুলাইয়ের ছাত্র জনতার বিপ্লব বিষয়ক স্মৃতিকে ধারন করা হয়েছে। সপ্তাহে দুদিন উন্মুক্ত বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে গত সব আয়োজনের চেয়ে সেরা আয়োজন হবে এটি।
এদিকে মেলার উদ্বোধন হলেও প্রায় সবকটি স্টলে তোড়েজোড়ে চলছে প্যাভিলিয়ন সাজসজ্জার কাজ। মেলায় এবার ছোট-বড় মিলিয়ে প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা ৩৬২টি। ইতোমধ্যে প্যাভিলিয়ন ও স্টল, খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁর কাজ চলছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কাজের অগ্রগতি ৭০ ভাগ। স্টল পাওয়া ব্যবসায়ীরা আশাবাদি হলেও মেলা ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এবারের অংশগ্রহণ কম থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। যদিও মেলবন্ধনের মেলা বলেছেন আয়োজকরা।
স্টল বরাদ্দ পাওয়া দিল্লি এ্যালুমিনিয়ামের হিসাব রক্ষক সোহেল রানা বলেন, গতবারের তুলনায় এবার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। তাই এবারে ক্রেতা দর্শনার্থী আগের তুলনায় বাড়বে। পাশাপাশি বিক্রি হবে দিগুন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচীব ড. নাজনীন চৌধুরী বলেন, এবার প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন থাকবে ১০০টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ১৫টি, জেনারেল স্টল, ফুডকোর্ট, মিনি স্টল, প্রিমিয়ার স্টল প্রায় ১৭০টি এবং ইউটিলিটি বুথ রাখা হয়েছে ৩০টি। পাশাপাশি হলের ভেতরে নিজস্ব একটা ক্যাফেটরিয়াতে এক সঙ্গে ৫০০ মানুষ বসে খাবার খেতে পারবে। এছাড়া মূল প্যাভিলিয়নের বাইরে খোলা স্থানে আরও ১২-১৫টি ফুড স্টল থাকছে।
এবারও বাণিজ্য মেলায় ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। বিদেশী ১৫টি স্টলে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। ফলে মেলা এবার জমবে। তরুণদের অংশগ্রহণ বেশি হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জয় বলেন, এবারের মেলায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা স্টল কিংবা মেলা সংশ্লিষ্ট কোন ব্যবসায় অজানা কারনে সম্পৃক্ত হতে পারেননি। এতে স্থানীয় দর্শনার্থীদের এক প্রকার ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। ফলে অনেকেই মেলা বিমূখ থাকতে পারেন। তবে দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা, পূর্বাচলের পরিবেশ ও কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ পাওয়া লোকজন সব বাঁধা পেরিয়ে মেলায় আগমন করবেন। জমবেও বেশ।
কেকে/এমএস