কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার মিনতি দাসের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দলিল রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি নিজের দফতরের দায়িত্ব পালনের সময় আইন ও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কিছু দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন। এমনকি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও তিনি ১৯ শতাংশ জমির দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন, যার মূল্য ৩৮ লাখ টাকা।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নে একটি জমি নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে বিতর্ক চলছে। জমিটি ছিল জুবেদা খাতুনের মালিকানায়, যিনি ২০১০ সালে মোমতাজ উদ্দিন মন্তুকে কিছু জমি লিখে দেন। তবে মোমতাজ উদ্দিনের সহোদর ভাই আবু হানিফও ২০১০ সালে ওই জমি দাবি করেন। মোমতাজ উদ্দিন, তার ভাই আবু হানিফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং আদালত বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আবু হানিফকে জমি থেকে দূরে থাকতে নিষেধ করেন।
২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর, কিশোরগঞ্জ জেলা আদালত আবু হানিফকে ২০ শতাংশ জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সেই জমিতে প্রবেশ বা অন্য কোনো কার্যকলাপ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা আদালত কর্তৃক সরাসরি সাব রেজিস্ট্রার অফিসে পাঠানো হয়, কিন্তু এর পরেও, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ সালে ওই জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়, যা আদালতের নিষেধাজ্ঞার স্পষ্ট লঙ্ঘন।
মোমতাজ উদ্দিন মন্তু দাবি করেছেন, তিনি বহু বছর ধরে ওই জমিতে বসবাস করছেন এবং তার মা তাকে লিখে দিয়েছিলেন, তবে তার ভাই আবু হানিফ ওই জমি বিক্রি করেছেন। মোমতাজ উদ্দিন এ বিষয়ে বারবার সাব রেজিস্ট্রার মিনতি দাসের কাছে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন, কিন্তু মিনতি কোনো সদুত্তর দেননি। এমনকি, তিনি বিষয়টির বিষয়ে আদালতকে অবহিত করেন এবং সুষ্ঠু বিচার চান।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার মিনতি দাসের কাছে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এক সপ্তাহের সময় চেয়ে পরে জানান, তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো বক্তব্য দেবেন না। বারবার অনুরোধ করেও, সাব রেজিস্ট্রার এই বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি এবং বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু দিন তার অচলাবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।
জমি বিক্রি করার বিষয়ে আবু হানিফ স্বীকার করেছেন যে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি বিক্রি করায় তিনি ভুল করেছেন। তিনি বলেন, এখন আমি এর সমাধান চাই, কেন না আমি এর ফলে ঠকেছি।
বর্তমানে, মোমতাজ উদ্দিন মন্তু আদালতের কাছে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে দাবি করেছেন এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে, জমির রেজিস্ট্রি করার প্রক্রিয়া আইনগতভাবে সঠিক হয়নি। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তারা, এই ঘটনার তদন্তের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষা করছেন, কিন্তু তদন্তের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
কেকে/এএম