আজ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৯তম আসরের আজ ২য় দিন। পূর্বাচলের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস মেলা উদ্বোধন করার পর থেকে ক্রেতা দর্শনার্থীদের আনাগোনা খুব একটা নেই।
ঘন কুয়াশা, শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম। তবে সরকারী ছুটির দিনের অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে গতবারের তুলনায় এবার বেশি জমজমাট হবে আশাবাদ জানিয়েছেন মেলার আয়োজক ও স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিভিশন সেন্টারে এবারের মেলায় নেই স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব। জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার গণ-আন্দোলনের সম্মানে তারুণ্যের শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে আদলে সাজানো হয়েছে মেলার মূল আকর্ষণ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কর্তৃপক্ষ জানান, এবারের মেলায় তরুণদের জন্য বিনোদনসহ জুলাই আন্দোলনের চেতনায় ৩৬ জুলাই ও তারুণ্যের বাংলাদেশ নামে কর্ণার রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শুক্র ও শনিবার উন্মুক্ত বিনোদনের আয়োজনে খুশি তরুণরা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ইপিবি সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলায় নতুনত্ব থাকছে এবার। প্রধান উপদেষ্টা নতুন উদ্যোক্তা তৈরির যে ঘোষণা দিয়েছেন সে আলোকে এবার যারা স্টল পেয়েছেন খরচ তুলনামূলক কম। তাই তাদের পণ্যের দাম আগের তুলনায় কম হাঁকাবে, প্রদর্শনীর জন্য পর্যাপ্ত সময় পেয়েছে। গত বছর জাতীয় নির্বাচনের কারণে এক মাস পিছিয়ে যাওয়ায় একটা হিমসিম পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু এবার সময়মতো মেলার সব আয়োজন হয়েছে। যদিও কিছু স্টলে তোড়েজোড়ে কাজ চলছে। আমরা তাগাদা দিচ্ছি, মেলা সফল করতে সব রকম আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মেলায় এবার ছোট-বড় মিলিয়ে প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা ৩৬৫টি। সাজসজ্জা ও কাজের অগ্রগতি ৭০ ভাগ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও স্টল পাওয়া ব্যবসায়ী আমানউল্লাহ বলেন, এবারের মেলা ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এবারের অংশগ্রহণ কম। তাই এ মেলায় অংশগ্রহণও কম হবে।
স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ী জারিন ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী হুমায়ুন কবির বলেন, মেলায় শীতের পোষাকগুলোর চাহিদা বেশি। যার বিক্রিও বাড়বে। তবে প্রবেশ টিকেটে অনলাইন আর স্ব-শরীরের উভয় পদ্ধতিতে ভোগান্তির কারণে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচীব ড. নাজনীন চৌধুরী বলেন, এবার প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ১০০টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ৮টি, জেনারেল স্টল, ফুডকোর্ট, মিনি স্টল, প্রিমিয়ার স্টল প্রায় ১৭০টি। এছাড়া মূল প্যাভিলিয়নের বাইরে খোলা স্থানে আরও ১২-১৫টি ফুড স্টল রয়েছে। এবারও বাণিজ্য মেলায় ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। বিদেশী ৮টি স্টলে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। রপ্তানিতে দেশীয় পন্য উন্নত দেশের সাথে যোগাযোগ, সম্পর্ক আর প্রদশর্নের মূল উদ্দেশ্য সফল করতে কাজ করছি।
মেলার ঘুরতে আসা এ এইচ বি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষার্থী মাহিরা তাসফি প্রভা বলেন, তারুণ্যের আয়োজন রাখা এ মেলার মূল আকর্ষণ বললেও প্রবেশ টিকেটে শিক্ষার্থীদের সহজ করা হয়নি। টাকা আরও কমানো দরকার ছিল। মেলার পাশে হকারদের দৌরাত্ন্য আর ছিনতাই, পকেটমার রয়েছে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে হবে।
কেকে/এজে