পূর্বাচলের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে, তবে কেনাকাটার ব্যাপারে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। ব্যবসায়ীরা এখনও স্টল সাজানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরের তৃতীয় দিন ছিল এক বিশেষ পর্ব।
মেলার আয়োজক এবং স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা আশাবাদী, তাদের মতে, গতবারের তুলনায় এবার মেলা আরও জমজমাট হবে। তবে রূপগঞ্জের রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে প্রায় ৩০ শতাংশ স্টল এখনও প্রস্তুত হয়নি, যা কিছুটা বিরক্তি তৈরি করেছে।
এদিন বিকালে মেলা ঘুরে দেখা যায়, দর্শনার্থীরা কেনাকাটার থেকে বেশি সময় পণ্যের দাম দরদাম করতে কিংবা স্টল ঘুরে দেখতে ব্যস্ত ছিলেন। ‘৩৬ জুলাই চত্ত্বর’ এবং ‘তারুণ্যের বাংলাদেশ’ প্যাভিলিয়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিডিও এবং স্থিরচিত্র দেখেও দর্শনার্থীরা বেশ মুগ্ধ হন।
এ ব্যাপারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, এবারের মেলা তরুণদের জন্য বিশেষ কিছু আয়োজন করেছে, যেমন বিনোদনমূলক কার্যক্রম এবং ‘৩৬ জুলাই ও তারুণ্যের বাংলাদেশ’ কর্নার। এছাড়া, শুক্র ও শনিবারে উন্মুক্ত বিনোদন কার্যক্রম আয়োজনের জন্য দর্শনার্থীরা প্রশংসা করেছেন।
যুবদল নেতা মশিউর রহমান টিপু বলেন, মেলার সকল প্রস্তুতি যথাসময়ে সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছু স্টলে কাজ চলছে, যা আশা করছি শীঘ্রই শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মেলায় অংশগ্রহণ না থাকা দুঃখজনক, তবে রূপগঞ্জের জন্য এটি গর্বের ব্যাপার।
মেলার পাশের সড়কে ট্রাফিক পুলিশের টিআই রাজিব বাহাদুর জানান, সড়ক নিরাপত্তা এবং যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৬০০ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গতবারের তুলনায় যানজটের সমস্যা নেই, কারণ ঢাকা বাইপাস সড়কটি নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
এবারের মেলায় মোট ৩৬৫টি স্টল রয়েছে, এবং সাজসজ্জা ও কাজের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। মিজানুর রহমান, এক স্থানীয় ব্যবসায়ী, জানান, শীতের পোশাকের চাহিদা বেশি হলেও আসবাবপত্রের দাম বেশ উচ্চ, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কিছুটা অপ্রাপ্য হয়ে উঠেছে।
এছাড়া, লক্ষীপুর জেলার রামগতি থেকে আসা সোহেল রানা জানান, টিকেটের দাম বেশি মনে হচ্ছে এবং কাউন্টারে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় দর্শনার্থীদের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজবাউল হুদা বলেন, এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, বিদেশি প্যাভিলিয়ন, সাধারণ স্টল, ফুডকোর্টসহ নানা ধরনের স্টল এবং পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে, যা দেশের রপ্তানি উন্নয়নে সহায়ক হবে।
কেকে/এএম