এতেকাফে বসার ৮ দিন পর এলাকাবাসীর তোপের মুখে পালালেন সেই সাধক। গত ২৫শে ডিসেম্বর ২১ দিনের জন্য এতেকাফে বসার উদ্দেশ্যে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা থেকে রওনা হয়ে পার্শ্ববর্তী আড়াইহাজার উপজেলার কদমির চরের নির্জন স্থানে চলে যান। তবে এতেকাফের ২১ দিন পূর্ণ না হতেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। স্থানীয়রা বলছেন কবিরাজী ব্যবসার প্রসার বাড়ানো এবং নিজেকে পীর হিসেবে জাহির করতে তিনি এই পন্থা অবলম্বন করেন।
তার এতেকাফে বসার আনুষ্ঠানিকতাও প্রচার করতে দাওয়াত করেন বিভিন্ন ইউটিউবারদের এমন অভিযোগ ও করেন তারা। তারই কর্মকাণ্ড ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, কিছু দুস্কৃতকারী তার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করায় তিনি নির্জনস্থান ত্যাগ করে বাড়ি ফিরে আসেন। পুনরায় তারা ডাকলে তিনি আবার ওই গর্তে এতেকাফে বসবেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ও তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের মাঝে মিশ্রে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
১০ ফুট গভীর গর্ত খুরে সাধনায় বসা ওই সাধক আবদুল জলিলের মাষ্টার ছেলে মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম রেজভী। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের মায়ারামপুর গ্রামের দোয়ানী পাড়ার বাসিন্দা।
উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের মায়ারামপুর গ্রামের দোয়ানি পাড়ার বাসিন্দা মো: রফিকুল ইসলাম রেজভী। বুধবার (০১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় একলাকাবাসীর তোপের মুখে নির্জন চর থেকে গোপনে বাড়ি চলে আসে। বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে গিয়ে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়। তার দাবি এলাকাবাসী ও কদমীরচরের কিছু লোকজন চরে এসে তাকে চলে যেতে বলে।
পরে সে সেখান থেকে চলে এসেছে। জানা যায় এতেকাফে বসা অবস্থায় তিনি বাড়ি থেকে পাঠানো তার স্ত্রী রান্না করা খাবার খেতেন তিনি ও তার ছেলে। তার সাথে তার ছেলে চরে থাকতেন বলে তিনি জানান।
রেজভী ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাশ করার পর প্রবাসে চলে যায় ৮ বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে বাড়ির মোড়ে টং দোকানে দাওয়াখানা কবিরাজ ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে সে বিদেশেও লোক পাঠানো শুরু করেন এ নিয়েও রয়েছে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। অনেকের কাছে টাকাও বছরের পর বছর ঘুরিয়ে বিদেশে না পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী শহীদুল্লাহ নামের একজন বলেন, রফিকুল ইসলাম রেজভী তার ফকিরী ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নির্জনে গিয়ে কয়েকদিন থেকেই চলে এসেছে। যা ইসলামের সাংঘর্ষিক নয়। এলাকায় নানা বিতর্কে জন্ম দিয়েছে সে।
রফিকুল ইসলাম রেজবীর ছেলে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, কিছু লোক গিয়েছিল আমাদেরকে ডিস্টার্ব করার জন্য এবং চাঁদা দাবির জন্য। আমরা চাঁদা দিয়ে থাকতে চাই নাই তাই চলে আসছি।
বিষয়ে রফিকুল ইসলাম রেজভীর বলেন, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় নির্জনে এতেকাফ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয় এবং কদমের চর এলাকার লোকজনের চাপে চলে আসতে হয়েছে। আমার মা আমাকে নির্দেশ দিয়েছে বলেই চলে এসেছি নাহলে আসতাম না। এখন কদমির চর এলাকার লোকজন চাচ্ছে আমি আবার ওইখানে এতেকাফে যাই। মা যদি আমাকে অনুমতি দেয় আমি আবার যাবো।
এ বিষয়ে মানিকপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, রেজভি একজন আদম ব্যবসায়ী। তার বাড়িতে অনেক মহিলারা আসে পানি পড়া, ঝার ফোক নিতে কিন্তু সে পীর এরকম কখনো শুনিনি। সে যেসব কার্যকলাপ শুরু করেছে এগুলো সমাজের বাহিরের কাজ সমাজ এটা গ্রহণ করে না। কিছু সংখ্যক লোক ব্যবসা করার জন্য এটাকে সমর্থন দিচ্ছে।
কেকে/এআর