আমাদের শরীর প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে প্রতিরোধ করে, বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা করে। এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা নির্ভর করে বিভিন্ন কোষ, প্রোটিনসহ অন্যান্য উপাদান যা সম্মিলিতভাবে আমাদের রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে ।
দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
১) জন্মগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা
২) অর্জিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
জন্মগত প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পরবর্তীতে অর্জিত প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এই রোগের কারণে দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা একেবারেই থাকে না অথবা অল্পস্বল্প দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার দুর্বলতায় দেহে বিভিন্ন রোগ জীবাণু আক্রমণে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এই রোগের ব্যাপ্তি কিন্তু কম নয়।
এ যাবৎ ৪৮৫টি বিভিন্ন ধরনের পিআইডি রোগ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীতে প্রায় ছয় মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা যায় প্রতি ১২০০ জনে একজন এ রোগে আক্রান্ত। আমাদের দেশেও এই রোগের শনাক্তের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রোগে শিশুসহ বড়রাও আক্রান্ত হতে পারে।
রোগের লক্ষণ সমূহ
বার বার বিভিন্ন অসুখের সংক্রমণ এই রোগে মূল লক্ষণ যেমন নিউমোনিয়া, কান পাকা, ডায়রিয়া, ত্বকে সংক্রমণ সহ জ্বর । এছাড়াও এলার্জি, অটোইমুউনিটি এমনকি ক্যানসারেও শরীরে বিভিনন অংগ আক্রান্ত হতে। এই রোগে আক্রান্ত শিশুকে বার বার বিভিন্ন ধরণের এন্টিবায়োটিক দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োগ করতে হয় ।
চিকিৎসা
রোগটি জটিল রোগ হলেও নিরাময় যোগ্য কিন্তু চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যয়বহুল নিয়মিতভাবে শিরাপথে ইমিউনোগ্লোবুলিন
ওষুধ ব্যবহার করলে সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভবপর। পুনঃপুন সংক্রমণ হওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কিছু কিছু ওষুধ সারা জীবন খেয়ে যেতে হবে যা কিনা বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে প্রতিরোধে সহায়ক। পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত হারে শিশুকে প্রদান করতে হবে। কিছু টিকা আছে যা কিনা এই সকল শিশুদের দেওয়া যাবে না। তবে সংক্রমন প্রতিরোধে নিউমোনিযা এবং ফ্লুর টিকা প্রদান করার ব্যবস্হা করতে হবে।
পিআইডি রোগের তথ্য সমূহ সবাইকে জানাতে হবে, সচেতনতা বৃদ্ধি করে রোগটিকে দ্রুত শনাক্তের ব্যবস্থা করে চিকিৎসার আওতায় আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: অধ্যাপক ডা.ইমনুল ইসলাম ইমন, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ
কেকে/এএম