মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মধুমেলাকে সামনে রেখে কপোতাক্ষ নদের উপর বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে নদের উপর ১৮০ ফুট দীর্ঘ সাঁকো নির্মাণ কাজে এলাকাবাসীও এগিয়ে এসেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাগরদাঁড়িতে আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হবে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা। মেলা শুরুর আগেই নতুন সাঁকো দিয়ে নদের দু’পারের প্রায় ২০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, যশোরের কেশবপুর ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের মানুষ সাঁকো নির্মাণে সহযোগিতা করছেন।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনোয়ার আবু তাহের বলেন, মধুমেলাকে সামনে রেখে নদের উপর কেশবপুর উপজেলা প্রশাসন ও দু’পারের মানুষের সহযোগিতায় সাঁকো নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৩০০টি বাঁশ কেনা হয়েছে। নদের মধ্যে এ পার থেকে ওপার পর্যন্ত বাঁশ দিয়ে প্রায় ৬০ ভাগ সাঁকোর কাজ শেষ হয়েছে। বাঁশের কাজ শেষ হলেই উপরে করা হবে কাঁঠের পাটাতনের কাজ। নদের দু’পারে আটটি পিলারও করা হবে। সাঁকোর কাজ শেষ করতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হবে। কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সাঁকো নির্মাণের জন্য দুই টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত চার মাস আগে বন্যার পানি বৃদ্ধিতে পুরাতন সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়। সে থেকেই এখনও পর্যন্ত নদের দু’পারের মানুষ ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় পারাপার হচ্ছেন। এখানকার সাঁকো দিয়ে কপোতাক্ষ নদের ওপারের সাতক্ষীরার শার্শা, সানতলা, কৃষ্ণনগর, পাঁচপাড়া, সেনেরগাতী, সরুলিয়া, ধানদিয়া, কুঠিরঘাটা এবং এ পারের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি, কোমরপোল, চিংড়া, বগা, নেহালপুর, মহাদেবপুর, রেজাকাটিসহ প্রায় ২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করে থাকেন। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দু’পারের মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে।
১৯৯৪ সালের ২৫ জানুয়ারি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাস সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের উপর ব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন। দীর্ঘ ৩০ বছরেও সে ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়নি।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষের সহজেই নদী পারাপারের জন্য সবসময় ওই সাঁকো নির্মাণে সহযোগিতা করা হয়। এবার মধুমেলায় আগত দর্শনার্থীদের যাতে যাতায়াতে কোন প্রকার ভোগান্তিতে পড়তে না হয় তার জন্য সাঁকোটি টেকসইভাবে করার সহযোগিতাও করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, কপোতাক্ষ নদের দু’পারের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সাগরদাঁড়িতে নদের উপর সাঁকো নির্মাণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এবার মধুমেলার আগেই সাঁকোটির কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। যাতে মধুমেলায় মানুষ সহজেই সাগরদাঁড়িতে আসতে পারেন।
কেকে/এমএস