ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (আইইবি) কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলামকে (রিজু) সভাপতি করে ১৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার আইইবি মিলনায়তনে একটি এক্সট্রা-অর্ডিনারি সাধারণ সভা থেকে এ কমিটি গঠন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইইবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খান মনজুর মোরশেদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এ্যাবে’র মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ এবং বুয়েটের ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রকৌশরী মো. সাব্বির মোস্তফা খান। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২০০-এর অধিক প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির অন্যদের মধ্যে সহ-সভাপতি (একাডেমিক ও আন্তর্জাতিক) প্রকৌশলী খান মনজুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী শেখ আল আমিন, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন ভূইয়া, প্রকৌশলী এটিএম তানভির-উল হাসান তমাল মনোনীত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. সাব্বির মাহবুব আলম, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. নূর আমিন, প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ ওসমানি, প্রকৌশলী মুহাম্মাদ আহসানুল রাসেল মনোনীত হয়েছেন। এছাড়া ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সহ-সভাপতি আব্দুল্লা আল মামুন, প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কে এম আসাদুজ্জামান মনোনীত হন।
আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম (রিজু) বলেন, এর আগে সাধারণ সভা চলাকালে জুনিয়র, মধ্যম এবং সিনিয়র ৩০ জনের অধিক প্রকৌশলী বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের কিছু ব্যক্তি আইইবি দখল করেছিল। যার ফলে সরকার না থাকার খবরেই তারা আইইবিতে আসতে সাহস পায়নি। বিগত সরকারের আমলে আইইবি লুটপাট ও দুর্নীতির আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। দেশ যেভাবে চলেছে তার চেয়ে খারাপ অবস্থায় চলেছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
তারা বলেন, আইইবি চত্বরের কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না। উন্নয়ন কাজ করা যাচ্ছে না। বিগত ১০ বছর ধরে যারা এ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, লুটে পুটে খেয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সবুর গংদের গ্রেফতার করে বিচার করতে হবে। আইইবির অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি করতে হবে।
আইইবিতে যত অনিয়ম দুনীতি হয়েছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করার আহ্বান জানান প্রকৌশলীরা। তারা বলেন, পদবঞ্চিতদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। ১৫ বছর চলে গেছে চাকরি জীবনে টাকার চেয়েও পদ গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সরকারের সময়ে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। তাই এমন একটি ব্যবস্থা করা দরকার যেখানে কোনো দলের না আইইবির স্বার্থ বাস্তবায়নে কাজ করবে। ভোটের অধিকার ও যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করতে হবে। সাংগঠনিকভাবে ও আইনি প্রক্রিয়ায় যেন কমিটি হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
তরুণ প্রকৌশলীরা বলেন, আমরা আইইবিকে কখানো প্রকৌশলীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে দেখিনি। তরুণদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব আনতে হবে। ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ারও দাবি জানান তারা।
আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম (রিজু) বলেন, আমার প্রথম ও প্রধান কাজ হলো একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া। যেই নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করব না। সারা দেশে যেহেতু কিছু সংস্কার চলছে, সুতরাং আমরাও কিছু সংস্কার করব। প্রথমত ভোটার তালিকা সংস্কার ও দ্বিতীয়ত আইবিতে যেসব অনিয়ম হয়েছে তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করব।
তিনি বলেন, এত কিছুর পরও আমরা আইইবির একটা রুমের তালাও খুলি নাই। প্রশাসনকে নিয়ে আমরা রুমের তালা খুলব। যারা অতীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমি তাদের সবাইকে মূল্যায়ন করতে চাই। এবার আন্দোলনে সবচেয়ে মূখ্য ভূমিকা রেখেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই আমরা চেষ্টা করব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে।
সভাপতির বক্তব্যে আইইবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খান মনজুর মোরশেদ বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে আইইবি পুরোপুরি ধুলিষ্যৎ হয়ে গেছে। অনেকেই মেম্বারশিপ পর্যন্ত রিনিউ করেননি। ১/১১ সময়ে আমি সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় অফিস করেছি। এমন কি হলো যে বর্তমান কমিটির কারও হদিস নেই। ফলে গত ২ মাস ২০ দিন ধরে আইইবির কোনো কার্যক্রম নেই। এজন্য আজকের এ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
কেকে/এজে