লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চুরির অপবাদে ইটভাটার শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনার পর দুপুরে অভিযুক্ত রিকশাচালক মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে জানা যায়, মাসুদের চাচাতো শ্যালক শাহিনসহ এলাকার নিশান ও আলমগীরসহ কয়েক যুবক পলাতক রয়েছে বলে।
নিহত ইটভাটার শ্রমিক আবু কালাম (৩০) রায়পুর উপজেলার বামনী ইউপির মধ্য কাঞ্চনপুর গ্রামের ভুইয়া গাজি পাটোয়ারী বাড়ীর মৃত ছানাউল্যার ছেলে।
এদিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে স্থানীয় একটি পক্ষ তার ছেলেকে অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্ত্রী রেহানা বেগম ও মেয়ে সুমি আক্তার।
নিহতের স্ত্রী রেহানা বেগম জানান, স্থানীয় রিকসা চালক মাসুদের রিকশার ব্যাটারি শনিবার রাতে কে বা কারা চুরি করে নিয়ে যায়। রোববার (৫ জানয়ারি) ওই বেটারী ভুইয়ার রাস্তার মাথা এলাকার ভাঙ্গারির দোকান থেকে উদ্ধার করে মাসুদের চাচাতো শ্যালক নিশান। পরে নিশান, রিদয়, আলমগীর ও শাহিনসহ আরও কয়েকজন আবু কালামকে চুরির অভিযোগে রায়পুরের হায়দরগন্জের বাংলাবাজার এলাকার ভাড়া বাসা থেকে মাইক্রোযোগে ধরে বামনী ইউপির মধ্য কাঞ্চনপুর এলাকার ভুইয়াগাজী বাড়ীর সুপারী বাগানে নিয়ে যায়। ক্ষমতাধর এই মানুষগুলো অমানবিকভাবে মারধর করে তাকে হত্যা করেছে। আমার স্বামী চুরি করেনি। আমি এই হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় আরেক সূত্র জানায়, নিহত আবু কালামকে এলাকায় চোর হিসেবে চেনে। তার বিরুদ্ধে চুরির নানা অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। সে এই মামলায় দুই বছর কারা ভোগও করেছেন। তবে এভাবে কাউকে মেরে ফেলা সমীচীন নয় বলে উল্লেখ করেন তারা।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে জেনেছি চোর সন্দেহে আবু কালামকে ধরে নিয়ে মারধর করে স্থানীয় কয়েকজন। পরে তাকে মধ্য কাঞ্চনপুর এলাকায় সুপারী বাগানে রেখে পালিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা। সুপারী বাগান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে তথ্যগুলো যাচাই করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান নিজাম উদ্দিন। ময়নাতদন্তের জন্য আবু কালামের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবো।
কেকে/এএম