বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫,
২৫ পৌষ ১৪৩১
বাংলা English

বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: গ্যাস সংকটের মধ্যে দাম বাড়ানোর তোড়জোড়      রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া      শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল      ৪৪০১ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প একনেকে উঠছে কাল      ‘রাজনৈতিক দলগুলো বেশি সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন’      দীর্ঘ ৭ বছর পর মায়ের সঙ্গে দেখা হবে তারেক রহমানের      ঢাকার টানা চার হার, রংপুরের পাঁচে পাঁচ      
প্রিয় ক্যাম্পাস
‘আপনি না আসলে নিজের স্টাইলে ৩ জনকে ফালায় দিয়ে বের হয়ে যাবো’
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:১৭ পিএম  (ভিজিটর : ১৮৬৯)
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ছাত্রশিবিরের ইমেজ সংকট তৈরি ও ফাঁসাতে আক্রমণ করার ‘নাটক সাজিয়ে’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে হুলুস্থূল কাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে।

রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের গলায় চাকু ধরে ঐ ছাত্রদলকর্মী শাবি ছাত্রদলে পদপ্রত্যাশী এক নেতাকে কল দিয়ে বলে, আপনি না আসলে আমাকে বলেন, আমি নিজের স্টাইলে তিনজনকে ফালায় দিয়ে বের হয়ে যাবো।

ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানোর জন্য সংগঠনের পদপ্রত্যাশী এক নেতার নির্দেশে ওই ছাত্রদলকর্মী এ অপচেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে ওই ছাত্রদলকর্মী ছাত্রশিবিরকে ‘খারাপভাবে’ উপস্থাপন করার জন্যই এ কাণ্ড ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত ওই ছাত্রদলকর্মী শেখ ফাকাব্বির সিন শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুরমা আবাসিক এলাকায় একটি মেসে থাকেন। এ ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম সরকারের সমর্থক হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।  

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আবাসিক শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, ‘হলের ওই কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থী থাকেন। রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করেই ওই কক্ষে আসেন শেখ ফাকাব্বির সিন। তিনি কক্ষে আসলে পারস্পরিক কথাবার্তার পর তিনি চাকু দিয়ে ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মারতে স্টেপ নেন। এক পর্যায়ে ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বের হয়ে ওই ছাত্রদলকর্মীকে কক্ষে আটকিয়ে রাখেন। রাত সাড়ে ১০টায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন যে, ‘আমি সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। হলে মেসের টাকা নিতে গেলে শিবিরের ছেলেপেলে আমাকে কুপিয়ে জখম করে রুমে আটকিয়ে রেখেছে।’

এই পরিস্থিতি হলের আবাসিক শিক্ষার্থী, প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে তাকে কক্ষ থেকে বের করেন। এবং ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলকর্মীকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে উভয়পক্ষকে তিনঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ কর হয়।

পরবর্তীতে রাত ২টা ৭ মিনিটে আরেক পোস্টে তিনি লিখেন, রাত সাড়ে ১০টায় শিবিরকে জড়িয়ে আমি যে পোস্ট করেছি তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানে ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা ছিল না এবং নির্যাতনও করা হয়নি। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমি পোস্টটি করেছি। আমি এটা ছাত্রশিবিরকে সবার সামনে খারাপভাবে উপস্থাপন করার জন্য করেছি। অতএব আমার পোস্টটি আমি তুলে নিচ্ছি।

এ বিষয়ে ৪৩৬ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে কেউ একজন নক না করে আমাদের রুমে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর সে অভদ্র ভাষায় আমাদের সাথে কথা বলে। তার পরিচয় পেয়ে বুঝতে পারি সে আমাদের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের জুনিয়র। তাকে বলি কারোর রুমে প্রবেশ করলে ভদ্রভাবে কথা বলতে হয়। এ ছাড়া হাফ প্যান্ট পরে রুমে প্রবেশ করতে নিষেধ করি উত্তরে তখন সে আমাকে গালি দিয়ে বলে ‘আমি এভাবেই কথা বলি তুই যা পারিস করিস।’

তিনি বলেন, এরপর তার সোয়েটারের ভেতরের পকেট থেকে ধারালো চাকু বের করে আমার গলায় ধরে এবং বলে তুই আমাকে চিনোস আমি খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তখন নিজেকে রক্ষার জন্য তাকে ধাক্কা দিয় এবং বের হয়ে বাইরে থেকে রুম আটকিয়ে দিই। এরপর প্রক্টর স্যারকে জানালে গার্ডরা এসে বাকিদের উদ্ধার করেন। আমিরুল ইসলাম আরও জানান, আমার রুমমেট সুষম শাহার কাছে তার মাদক সেবনের ভিডিও থাকায় এটি ডিলিট করতে মূলত সে হলে আসে।

একই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান রাসেল বলেন, আমিরুল নিজেকে বাঁচাতে বের হয়ে গেলে রুমে আমিসহ আরমান ও রাতিন আটকা পড়ে যায়। তখন ফাকাব্বির আমার গলার কাছে চাকু ধরে এবং ইউটিউব থেকে তার নিজের এলাকায় করা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ভিডিও দেখায়। এরপর সে নাঈম সরকার (ছাত্রদল নেতা) নামে একজনকে কল দেয় এবং বলে ভাই আমাকে শিবিবের পোলাপানরা ধরে আটকায় রাখছে। ‘আপনি না আসলে আমাকে বলেন, আমি নিজের স্টাইলে তিনজনকে ফালায় দিয়ে বের হয়ে যাবো।’ এরপর আমরা বের হয়ে গেলে সে নিজের উরুতে ছুরির আঁচড় দিয়ে আমাদের উপর দোষ চাপিয়ে দেয় এবং ফেসবুকে পোস্ট করে। পরে স্যাররা এসে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার বলেন, গতকাল রাতে ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য মূলত কাজটি করা হয়েছে। ওই কক্ষে আমাদের কোনো কর্মীও নেই। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হলেও আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি এবং সঠিক তদন্তের বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। যে ছেলে পোস্টটি করেছেন তার পূর্বের ফেসবুক পোস্টগুলো দেখে বোঝা যায় সে ছাত্রদল কর্মী। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের আশা করি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা নাঈম সরকার বলেন, ছেলেটা আমার পূর্ব পরিচিত। সে আমাকে কল দিয়ে বলছে ভাই শিবিরের পোলাপান আমাকে মারছে ও আটকে রাখছে। উত্তরে আমি বললাম, আমি তো সিলেট নেই ঢাকা চলে আসছি। যেহেতু আটকে রাখছে, তোকে উদ্ধার করার প্রয়োজন। তার বন্ধুরা যাতে দেখতে পারে এই জন্য তাকে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিতে বলি। তা ছাড়া আর কিছুই না।

এ বিষয়ে ছাত্রদল কর্মী শেখ ফাকাব্বির সিনের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থালে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি এবং প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি। ছাত্রশিবিরের জড়িতের বিষয়ে ছেলেটি যে অভিযোগ করেছে সেই অভিযোগ সে তুলে নিয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে।

কেকে/এএম
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

লামায় ২টি অবৈধ ইটভাটাকে ৪লক্ষ টাকা জরিমানা
গ্যাস সংকটের মধ্যে দাম বাড়ানোর তোড়জোড়
সুদের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব কুপিয়ে ব্যবসায়ীকে হত্যা
১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জে ভ্যাট ৫৬ টাকা
উদ্যোগ নেই ঘোষণাপত্রের

সর্বাধিক পঠিত

শাবিপ্রবির পিএমই অ্যাসোসিয়েশনের ভিপি শাফিন, জিএস মেহেদি
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় জাবিতে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল
পবিপ্রবিতে বিজয়-২৪ হলে কৃষিগুচ্ছে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নবাগত সংবর্ধনা
ফেরানোর চাপের মধ্যেই হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়াল ভারত
গঙ্গাচড়ায় গাঁজাসহ আটক ১

প্রিয় ক্যাম্পাস- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝