বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫,
২৫ পৌষ ১৪৩১
বাংলা English

বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: গ্যাস সংকটের মধ্যে দাম বাড়ানোর তোড়জোড়      রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া      শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল      ৪৪০১ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প একনেকে উঠছে কাল      ‘রাজনৈতিক দলগুলো বেশি সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন’      দীর্ঘ ৭ বছর পর মায়ের সঙ্গে দেখা হবে তারেক রহমানের      ঢাকার টানা চার হার, রংপুরের পাঁচে পাঁচ      
খোলাকাগজ স্পেশাল
বিএনপি-জামায়াত বাগযুদ্ধ, কৌশল নাকি দ্বন্দ্ব
শিপার মাহমুদ
প্রকাশ: সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:২৭ পিএম আপডেট: ০৬.০১.২০২৫ ৮:৪৮ পিএম  (ভিজিটর : ৮৮)
ছবি: ই-পেপার থেকে

ছবি: ই-পেপার থেকে

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এক সময়ের রাজনৈতিক মিত্র এই দুই দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বক্তব্যে দূরত্ব এখন দৃশ্যমান।

অতিসম্প্রতি বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনার পর তাদের মতবিরোধ প্রকাশ্যে আসে। আর এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনরাও করছেন নানা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। কেউ বলছেন এটি রাজনৈতিক কৌশল, আবার অনেকের মতে এটি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। এর বাইরেও আরেকটি সমীকরণ রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন- রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগ যেন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে; সেজন্য জামায়াতকে বিরোধী অবস্থানে শক্তিশালী করতে এমন রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।  

এর আগে জামায়াতের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেছিলেন, ‘শুধু পার্শ্ববর্তী দেশই অপপ্রচার করছে না, দেশের দু-একটি রাজনৈতিক দল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। হাসিনার আমলে যারা লুট করেছে, সেই এস আলমদের উত্তরসূরি হয়ে ব্যাংক দখল করেছে অনেকে। বড় বড় কথা বলে বিএনপির নামে কলঙ্ক লেপন করছে। পাড়া-মহল্লায়, জেলায় জেলায় অনেক টার্মিনাল দখল, টেন্ডারবাজিসহ নানা কিছু দখল করেছে একটি দল। সেই রাজনৈতিক দলটিকে বলতে চাই, খুব নীরবে-নিভৃতে সব অপকর্মের সঙ্গে আপনারা জড়িত। ৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের আত্মসাৎ দেখেছে জনগণ। কারা পায়ের রগ কাটে, তাদের চেনে জনগণ।’

এ ছাড়াও আরেক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘আমি সেই রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই, ইসলামপন্থি সেই রাজনৈতিক দল, একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল?’ -প্রশ্ন রাখেন তিনি।

রিজভীর দেওয়া সেই অস্পষ্ট বক্তব্যের বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয় জামায়াত ইসলামীর পাল্টা বিবৃতিতে। ওইদিন রাতেই রিজভীর বক্তব্যে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতি দেন। এতে তিনি বলেন, ‘রিজভীর বক্তব্য বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে এসব কথা উচ্চারণ করে কী অর্জন করতে চান, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট নয়। জামায়াত রগকাটা ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের রাজনীতি কখনো করেনি। রিজভীর বক্তব্য চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।’

এদিকে এসব ইস্যুতে সবাইকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কে আওয়ামী লীগের চুরি, লুটপাটের চিত্র নিচে পড়ে যাচ্ছে। তারা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যে ধ্বংস করে দিয়েছে দেশটাকে, অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে, এটা মানুষ ভুলে যাচ্ছে।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ বিরোধ আসলে রাজনৈতিক কৌশলেরই অংশ। জামায়াত একটি স্বাধীন রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করতে চাইছে, যা তাদের সমর্থকদের চাঙ্গা করবে। এর বাইরেও আরেকটি সমীকরণ রয়েছে। এটি হলো- রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগ যেন ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে; সেজন্য জামায়াতকে বিরোধী অবস্থানে শক্তিশালী করতে এমন রাজনীতিতে কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। আবার অনেকের ভাষ্য, বিএনপি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়ভাবে নিজেদের একটি উদারপন্থি দলের চেহারা দেখাতে চায়। তাই এটিকে কৌশল বলাটাও উচিত হবে না। ফলে এটিকে তারা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হিসেবেই দেখছেন।

বিএনপি-জামায়াতের চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়ন নিয়ে কথা হয় জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাড. মতিউর রহমান আকন্দের সঙ্গে। তিনি খোলা কাগজকে বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীর কাজ তো নতুন নয়, বহু পুরোনো। জামায়াত ইসলামী পার্লামেন্টে ছিল, আন্দোলনেও ছিল। দেশের প্রত্যেকটি ইস্যুতে জামায়াতের ভূমিকা রাখছে। বিএনপির সঙ্গেও আমরা সরকারে ছিলাম। ১৯৯১ সালে বিএনপিকে নিঃস্বার্থ সমর্থন দিয়ে সরকার গঠনে আমরা সহায়তা করেছি। আর জামায়াত ইসলামী সম্পর্কে বিএনপির ধারণা তো আজকে নতুন না, বহু পুরোনো। এখন হঠাৎ করে তারা এ জাতীয় কথা কেন বলছে, এটা উনারাই (বিএনপি নেতারা) বলতে পারবেন।’

অনেকেই মনে করছেন- বিএনপি-জামায়াতের চলমান বাক্যুদ্ধ এটি রাজনৈতিক কৌশল। রাজনীতির মাঠে জামায়াত ইসলামী শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকায় থেকে আওয়ামী লীগকে দমনে এ কৌশল ব্যবহার করছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জামায়াতের এ সিনিয়র নেতা খোলা কাগজকে বলেন, ‘কে সরকারে যাবে, কে বিরোধী দলে থাকবে এটা তো আরো পরের বিষয়। আমরা চাইলেই সরকারে কিংবা বিরোধী দলে যাইতে পারব না। এটা জনগণ ভোট দিয়ে ঠিক করবে। ব্যাপারটা বিএনপির রাজনৈতিক বক্তব্য, তাদেরও একটা লক্ষ্য আছে। তাই এটা তারাই ভালো বলতে পারবে।’

বিএনপিকে নিয়ে জামায়াতের বক্তব্য-বিবৃতি প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু খোলা কাগজকে বলেন, ‘তারা একটি আলাদা রাজনৈতিক দল। তাদের কৌশল তাদের। তাদের চিন্তা-ভাবনা দেশবাসী যেমন জানে, বিশ্ববাসীও জানে। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দলই শুধু নয়, দেশ পুনর্গঠনে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় বিএনপির কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল, স্বাধীনতার ঘোষকের দল, গণতন্ত্রের পক্ষের দল।’

জামায়াতের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭১ সালের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং জামায়াত যা ভাবছে তা অনৈতিক; এরচেয়ে ভয়ঙ্কর আর কিছু নেই। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সমর্থক গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতকে নিয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।’

কেকে/এজে
আরও সংবাদ   বিষয়:  বিএনপি-জামায়াত   বাগযুদ্ধ   কৌশল নাকি দ্বন্দ্ব  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

গ্যাস সংকটের মধ্যে দাম বাড়ানোর তোড়জোড়
সুদের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব কুপিয়ে ব্যবসায়ীকে হত্যা
১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জে ভ্যাট ৫৬ টাকা
উদ্যোগ নেই ঘোষণাপত্রের
সরকারের বন্দুক এবার রাজনীতিকদের কাঁধে

সর্বাধিক পঠিত

মেয়ের জন্য বই আনতে গিয়ে প্রাণ গেল বাবার
শাবিপ্রবির পিএমই অ্যাসোসিয়েশনের ভিপি শাফিন, জিএস মেহেদি
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় জাবিতে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল
পবিপ্রবিতে বিজয়-২৪ হলে কৃষিগুচ্ছে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নবাগত সংবর্ধনা
ফেরানোর চাপের মধ্যেই হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়াল ভারত

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝