ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি শহরতলিতে দেখা গেছে আগুনের ফুলকি। পুড়ে গেছে অসংখ্য ভবন। হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একযোগে কাজ করেছে উদ্ধারকর্মীরা। ঝড়ো বাতাসে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
হেলিকপ্টারের সাহায্যে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করতে দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবকদের। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে লস অ্যাঞ্জেলেসে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। বুধবার এএফপির প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকা পার্বত্য এলাকার ১ হাজার ২৬০ একর জায়গাজুড়ে দাবানল ছড়িয়েছে। আগুনে বহু বাড়ি ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে ১০ হাজার বাড়ি ও ১৩ হাজার ভবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দাবানল থেকে বাঁচতে ৩০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বেশকিছু দামি দামি বাড়িঘর আছে। দাবানল ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে আতঙ্কিত বাসিন্দারা প্যাসিফিক প্যালিসেডস পার্বত্য এলাকায় ঢোকা ও বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটির মধ্যে তাদের গাড়ি ফেলে রেখে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে হেঁটেই রওনা করেন।
এমন অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সড়ক থেকে গাড়িগুলোকে সরাতে বুলডোজার ব্যবহার করেন। বুলডোজার দিয়ে বেশ কিছু গাড়িকে ঠেলে রাস্তার এক পাশে নিয়ে যান তারা। এর মধ্যে বিএমডব্লিউ, টেসলা ও মার্সিডিজের দামি মডেলের গাড়িও আছে। এ সময় অনেকগুলো গাড়ি ভেঙে যায় এবং এগুলোর অ্যালার্ম বাজতে থাকে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিস বিভাগের প্রধান ক্রিস্টিন ক্রাউলি বলেছেন, নিরাপদে সরে যাওয়ার ক্ষেত্রে হুড়োহুড়ি হলেও দাবানলের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মৃত্যু বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্টনি ম্যারন মঙ্গলবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা বিপদমুক্ত নই। বাতাসের গতি আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি।
হোয়াইট হাউস বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইতিমধ্যে দাবানল সম্পর্কিত তথ্য জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয়ভাবে সহযোগিতা করার জন্য বাইডেনের দল স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের আভাসে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেনচুরা কাউন্টির কিছু অংশে প্রতি ঘণ্টায় ১০০ মাইল (১৬০ কিলোমিটার) বেগে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গুরুতর দাবানলের বিপদজনিত সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা বহাল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কেকে/এইচএস