গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। সাঁওতাল নারী নির্যাতনের দায়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজা বিরাট আদিবাসী গ্রামে একজন সাঁওতাল নারীকে নির্যাতন এবং পরে তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
গাইবান্ধা পুলিশ সুপার নিশাত এ্যঞ্জেলা জানান, গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ পরির্দশক ওসি বুলবুল ইসলামের নিদের্শে থানার উপ-পরিদর্শক মানিক রানা ও উপ-পরিদর্শক মো. শাহজাহান আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বুধবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকার শাহবাগের প্রিতম হোটেল থেকে রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দেশের ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক এক বিবৃতিতে ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান। মারধরের শিকার ফিলোমিনা হাসদা (৫৫) বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফিলুমিনা হাঁসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন দৈনিক খোলা কাগজকে জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে গ্রামের পাশে সাঁওতালদের পৈত্রিক জমি, যা বাঙালিরা দখল করে নিয়েছে, সেই জমিতে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মাটি ভরাট করছিলেন। জায়গাটি আগে পতিত অবস্থায় ছিল। হঠাৎ করে চেয়ারম্যান সেই জমিতে মাটি ভরাট করছেন দেখে কয়েকজন সাঁওতাল যুবক বাধা দেয়। আমরাও আমাদের জমিতে মাটি ফেলতে থাকি তখন। চেয়ারম্যান আমাদের জমিতে মাটি ফেলতে বাধা দেয়। ফলে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এসময় আমার মায়ের কানে চেয়ারম্যান থাপ্পড় দেন। এতে মা মাটিতে পড়ে যান এবং তার কান দিয়ে রক্ত বের হয়। ওই রাতেই চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের বাড়িতে আগুন দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পরদিন ফিলুমিনা হাঁসদার আরেক ছেলে জুলিয়াস সরেন বাদী হয়ে রফিকুল ইসলাম, তার ভাই এবং অন্য চার জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২০-২৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনার পর গাইবান্ধা জেলা বিএনপি রফিকুল ইসলামকে সব পদ থেকে বহিষ্কার করে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামকে ঢাকার একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তাকে গাইবান্ধায় ফিরিয়ে আনা হবে।
কেকে/এজে