সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ধুনচি গ্রামের খোদা বক্স মিয়ার কন্যা ময়না খাতুন ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশ পুলিশের সার্কুলার অনুযায়ী সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান এবং যাচাই-বাছাইয়ের উন্নীত হন।
কিন্তু একশ্রেণীর অসাধু পুলিশের যোগসাজশে কতিপয় ব্যক্তি ময়নাকে ডেকে বলে চাকরি নিশ্চিত করতে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন অন্যথায় পরবর্তী তারিখে তাকে বাতিল দেখানো হবে। এতে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মেয়েটি টানা তিনদিন নিয়মিত ঘুম খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা সহ প্রভাবশালীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকে ঘুষ ব্যতীত একটি চাকরির আশায়, কিন্তু কোথাও সহযোগিতা না পেয়ে অবশেষে তিনদিন পর সে ফিরে যায় সেই পুলিশ লাইনে কিন্তু শারীরিক দুর্বলতা আর অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কুঁড়ে খেয়ে ফেলেছিল মেয়েটির আপাদমস্তক।
এক পর্যায়ে সে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনের ভেতরেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় সে স্ট্রোক করেছে এবং তার শরীর প্যারালাইজড হয়ে গেছে।
ঘটনাটি জানতে পেরে গতকাল ১০ জানুয়ারি দুপুরে ময়নার বাড়িতে ছুটে যান বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ডিআইজি খাঁন সাঈদ হাসান। এবং উপহার হিসেবে নিয়ে যান একটি হুইলচেয়ার।
আকস্মিকভাবে সাবেক ডিআইজি'কে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে ময়নার পুরো পরিবার এবং ময়না যখন বুঝতে পারেন যিনি এসেছেন তিনি একজন পুলিশের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। আত্মহারা ময়না তখন সকল অবসাদ ভুলে হৃদয় চিরে হাঁসতে থাকেন আর সেই হাঁসিতেই কেঁদে ফেলেন ডিআইজি খাঁন সাঈদ হাসান।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে খাঁন সাইদ হাসান বলেন, পুলিশের কিছু কিছু অসাধু ব্যক্তি পুরো ডিপার্টমেন্টকে কলঙ্কিত করে গেছে আমরা ভবিষ্যতে সেগুলো ফিল্টার করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে একটি জনবান্ধব আইন-শৃঙ্খলা কাঠামো উপহার দিতে চাই।
এছাড়া তিনি আরো বলেন ময়নার পরিবারের অভিযোগ যদি সত্য হয়ে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে এ সকল ঘটনার ব্যবস্থা নেয়া হবে কঠোরভাবে। সেই সাথে তিনি ময়না ও তার পরিবারের পাশে মানবিক দৃষ্টি নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের আহ্বান জানিয়েছেন এবং তিনি নিজেও তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
কেকে/এমএস