শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫,
২৮ পৌষ ১৪৩১
বাংলা English

শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং নিষেধাজ্ঞায় সাকিব       যুক্তরাষ্ট্রের আগুন আরও লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা      কিছু মানুষ ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল      ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজে পলাতক আ.লীগ নেতা      ভ্যাট আরোপের নয়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে সরকারকে: আখতার হোসেন      রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি শাখাগুলো দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা      তারেক রহমানসহ ৩ জনকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণ      
প্রিয় ক্যাম্পাস
গৌরবময় অগ্রযাত্রার ৫৫ বছরে জাহাঙ্গীরনগর বশ্বিবদ্যিালয়
শাহরিয়ার আলম, জাবি
প্রকাশ: শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬:০৯ পিএম  (ভিজিটর : ১৭)
ছবি: প্রতিনিধি

ছবি: প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন আজ।গৌরব, ঐতিহ্য ও সাফল্যের ৫৪ বছর পেড়িয়ে ৫৫ বছরে পা দিলো জাহাঙ্গীরনগর। এক সুদীর্ঘ পথচলার মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠিত এবং স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মাঝখানে গড়ে ওঠা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধুমাত্র একাডেমিক উৎকর্ষতার জন্যই নয়, বরং এর অনন্য ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরিবেশবান্ধব পরিবেশের জন্যও বিখ্যাত।এমনকি দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ও এটি।

প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস

১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা শুর হয়। ১৯৬৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ঢাকার ৩২ কিলোমিটার উত্তরে সরকারী ডেইরি ফার্মের ৭৫০ একর স্থান বরাদ্দ করা হয়। ১৯৬৮ সালের এপ্রিলে 'জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প' শিরোনামে নির্মাণকার্য শুর হয়। ১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট পূর্ব পাকিস্তান সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’ নামকরণ করে।

মূলত ঢাকা শহরের পূর্বনাম জাহাঙ্গীরনগর এর সাথে মিল রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় নাম রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আহসান আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন।প্রথমে 'জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়' নামে চালু হলেও ১৯৭৩ সালের ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয এক্ট' এর বাইলজ অনুযায়ী নাম সংক্ষিপ্ত করে 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয' নামকরণ করা হয়।প্রতিষ্ঠার সময় মাত্র তিনটি বিভাগ এবং ১৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও ২৩ জন শিক্ষক নিযযে শুর হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ ৪ টি ইন্সটিটিউট, ৬টি অনুষদ এবং ৩৪ টি বিভাগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার  সুযোগ দান করছে। বিশ্ববিদ্যালযয়ের শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের জন্য এটি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে।

বর্তমানে ৪ টি ইন্সটিটিউট ও ৩৪ টি বিভাগের অধীনে ৭২৪ জন শিক্ষক এবং ১২৮৮৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা ৩৩৬ জন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ৯৪০ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে ৫৪৮ জন। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ছেলেদের জন্য ১১ এবং মেয়েদের জন্য ১০ টি মোট ২১ টি আবাসিক হল রয়েছে।

একাডেমিক উৎকর্ষতা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের মেধা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। বিজ্ঞান, কলা, সমাজবিজ্ঞান, এবং ব্যবসায় প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের টাইমস হায়ার এডুকেশন কর্তৃক প্রণীত তালিকায় এশিয়ার মধ্যে ৩০১ এবং বাংলাদেশের মধ্যে যুগ্ম ভাবে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এছাড়াও একই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-গবেষক শিক্ষা ও গবেষণায় পুরষ্কার, পদক ও ফেলোশিপ অর্জন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উচ্চমানের ল্যাব সুবিধা প্রদান করে। এখানকার শিক্ষার্থীরা শুধু স্থানীয় পর্যায়েই নয়, বরং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাফল্য অর্জন করেছে।

জাহাঙ্গীরনগরের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালকে অনেক সময় “প্রকৃতির কন্যা” বলা হয়। এটি একটি সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাস, যেখানে অসংখ্য লেক, গাছপালা এবং পাখির কলকাকলি শিক্ষার্থীদের মনোরম এক পরিবেশ প্রদান করে। শীতকালে অতিথি পাখিদের আগমন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে প্রতিবছর দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি সমারহ ঘটে। এই পাখিদের উপস্থিতি জাহাঙ্গীরনগরকে পরিণত করে দেশের অন্যতম পাখি পর্যবেক্ষণের কেন্দ্রে। পাশাপাশি, ক্যাম্পাসের চারপাশে ছড়িযে থাকা গাছগাছালি এবং ফুলের গন্ধ শিক্ষার্থী এবং দর্শনার্থীদের মনকে সতেজ রাখে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্যও বিখ্যাত। এখানকার বার্ষিক সাংস্কৃতিক উৎসব, বসন্ত উৎসব, এবং নাট্য কর্মশালা শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, বরং দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সংগঠনগুলো বিশেষ করে "জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার", আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হওয়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, যেমন ডিবেটিং প্রতিযোগিতা, সংগীতানুষ্ঠান এবং সাহিত্যিক আড্ডা, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে উজ্জীবিত করে।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ তিনটা সাল অতিক্রম করে এসেছে। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ , ১৯৯০ এর সৈরাচার বিরোধী আন্দোলন  এবং ২০২৪ এর ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন। ২০২৪ এ আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করা হবে। ২৪ এর চেতনাকে বাস্তবায়ন করাই হবে আমাদের কাজ। ২৪ এর চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা সবার প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান। '

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং নিষেধাজ্ঞায় সাকিব
দক্ষিণখানের কিশোর গ্যাং লিডার খোকনের বিরুদ্ধে মামলা
যুক্তরাষ্ট্রের আগুন আরও লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা
কিছু মানুষ ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল
ক্ষমতাবানকে প্রশ্ন করা সাংবাদিকের কাজ: প্রেস সচিব

সর্বাধিক পঠিত

চোরাই গরুর মাংস দিয়ে বিএনপি কর্মীদের ভুড়িভোজ, গ্রেফতার ২
গাছ থেকে পড়ে গাছীর মৃত্যু
কেরানীগঞ্জে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, বন্ধু গ্রেফতার
টঙ্গীতে ভুয়া পুলিশ পরিচয়দানকারী গ্রেফতার
ভালোবাসার শহর পাংশা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

প্রিয় ক্যাম্পাস- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝