দেশের চারুশিল্প আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মাহমুদুল হকের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষ্যে বাগেরহাটের রামপালের শ্রীফলতলায় তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নানা আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে মাহমুদুল হকের স্মরণে তার প্রিয় প্রতিষ্ঠান ‘আমাদের গ্রাম’ ক্যানসার কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন, পরিবার, শুভানুধ্যায়ী এবং তার ভক্তরা সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। স্মরণসভায় বক্তারা তার জীবন ও কর্মের নানা দিক তুলে ধরেন এবং দেশের চারুশিল্পে তার অবদান স্মরণ করেন।
১৯৪৫ সালে জন্ম নেওয়া মাহমুদুল হক ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকসহ চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে ছাপচিত্র বিভাগ ও জাতীয় চিত্রশালা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়।
দেশ-বিদেশে ৩৯টি একক এবং বহু যৌথ প্রদর্শনীতে তার শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে। তার শিল্পকর্মে প্রকৃতি, মানবিক অনুভূতি ও সামাজিক বাস্তবতার অসাধারণ প্রতিফলন পাওয়া যায়।
মাহমুদুল হক তার সৃজনশীল দক্ষতার জন্য ২০১৯ সালে জাপানের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান লাভ করেন।
এছাড়া জাপানের সুচিউরা সিটি শ্রেষ্ঠ চিত্রকলা পুরস্কার, ১৯৯২ সালে ১০ম জাতীয় শিল্পকলা প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৯৩, ১৯৯৫ ও ১৯৯৭ সালে টানা তিনবার এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীতে সম্মানসূচক পুরস্কার, কুয়েত আন্তর্জাতিক দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীতে দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনের সুলতান পদকসহ দেশে বিদেশে অনেক পদক ও পুরস্কার লাভ করেন।
তার চিত্রকর্ম জাতীয় জাদুঘর ও জাতীয় চিত্রশালাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গ্যালারিতে স্থায়ীভাবে স্থান পেয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাহমুদুল হক। তার মৃত্যু দেশের চারুশিল্পাঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে এনেছে। তাকে পরদিন তার গ্রামের বাড়ি রামপালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
কেকে/এএম