জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে চীনে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। আক্রান্ত রোগী একজন নারী, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর দেহে এইচএমপিভি শনাক্ত হয়েছে বলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে জানা গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তি একই সঙ্গে ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া রোগেও ভুগছেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, এইচএমপিভি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। বাংলাদেশে এর উপস্থিতি আগেও পাওয়া গেছে এবং এটি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তিনি বলেন, এই ভাইরাসটি প্রতিবছরই ২-৪ জনের মধ্যে শনাক্ত হয়। তবে এবছর নতুন করে এটি আলোচনায় এসেছে।
২০০১ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়, যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি আরও আগে থেকেই মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে আসছে। এমনকি ১৯৫৮ সাল থেকেই এই ভাইরাসের উপস্থিতি থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টের মতো অসুখ হতে পারে। তবে এটি সাধারণত শিশু, বয়স্ক মানুষ এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
এইচএমপিভি সংক্রমণের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি নেই। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাই একমাত্র ভরসা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে, যা করোনাভাইরাসের মতো ব্যাপক সংক্রমণ রোধে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ভাইরাস নিয়ে নতুন করে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি বাংলাদেশে বহু বছর ধরেই উপস্থিত, কিন্তু তেমন ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করেনি। তবে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ গুরুতর হতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীনে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে। এরপর এটি জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।
কেকে/এএম