সবুজে শ্যামলে ঘেরা অপরুপ সৌন্দর্য্যরে লীলাম্ভিত, চির সবুজের দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার আত্রাই ছোট যমুনা নদীর দুই তীর এখন নয়নাভিরাম সবুজের সমারোহ। নদীর তীরের উর্বর পলি মাটিতে বিভিন্ন জাতের সবুজ ফসল বিপ্লবের হাতছানি দিচ্ছে।

বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ গাছপালার মধ্যে নানা রকম পাখির কলতানে মুখরিত নদীর দুই তীর। নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে চলা আত্রাই নদীর বুক চিরে এক সময় বজরা ও পালতোলা বড় বড় নৌকা চলত।

কালের পরিক্রমায় সেই নদী এখন আপন স্বকীয়তা হারিয়ে ঋতুভিত্তিক বিভিন্ন ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। নদীর দুই তীরে তাকালে শুধুই সবুজের সমারোহ।

দিনের পর দিন পলি জমে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় অতি দ্রুতই নদীর দুই তীর শুকিয়ে চাষ হচ্ছে ধান, গম, ভুট্টা, বাদাম, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি।

ক্ষীণধারায় বয়ে যাওয়া নদীর দুই ধারে এখন কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা সতেজ ফসল বাতাসে দোল খাচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে চলা আত্রাই নদীর দুই তীরের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আত্রাই নদী তীরের কৃষকেরা অনেক বছর ধরে নদীর দুই তীরে বিভিন্ন প্রজাতির আবাদ করে আসছে।

শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বর্তমানে সব প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। নদীর যে সকল স্থান আগেই শুকিয়ে গেছে সে সকল স্থানে ফসলের চাষ হচ্ছে পুরোদমে।

কয়েক বছর আগে নদীতে প্রচুর পরিমানে বালি ছিল কিন্তু এখন পলি পড়ে কিছু কিছু স্থানে বালি না থাকায় নদীর মাঝে ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলার রাইপুর গ্রামের কৃষক শ্রীলাল, পিয়ার আলী ও আবেদ আলী বলেন, আমরা আগে নদীর দুই পাশে আবাদ করতাম না কিন্তু বর্তমানে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় নদীর পানি দিয়ে ধানের চাষ করতাম কিন্তু এখন সম্ভব হচ্ছে না।

কারণ ধান তোলার আগেই নদীর পানি একেবারে শুকিয়ে যাচ্ছে শেষের দিকে আর পানি পাওয়া যায় না।

উপজেলার জাতোপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতি বছরই এই সময়টিতে নদীর দুই তীরে বিভিন্ন আবাদ করে থাকি।

কালিকাপুর ইউনিয়নের শলিয়া ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কেএম মাহাবুব হোসেন জানান, বর্তমানে এখন আত্রাই নদী তীরের কৃষকেরা নদীর দুই তীরে বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপাদন করে থাকে এবং আমরা কৃষি অফিসরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে আসছি। প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও নদী তীরের ফসলের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, নদীর চরের জমি খুবই উর্বর তাই ফসল উৎপাদনও বেশি হয়। ফলে কৃষকের মাঝে নদীর চরে ফসর ফলানোর আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কৃষকেরা যাতে ভালো ফসল ফলাতে পারে সে জন্য কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কেকে/এএম