ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অন্তরা আক্তার(১৫) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক পরিবার ও পুলিশের ধারনা এটি একটি আত্মহত্যা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে অন্তরার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এর আগে গতকাল রোববার দিনগত রাত সাড়ে ১০ দিকে অন্তরার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, পরিবারের আদুরে মিষ্টি চেহারার মেয়ে অন্তরা আক্তার। বাবা-মা ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকুরির সুবাদে রাজধানীর তেজগাঁও মডেল হাই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল অন্তরা। সপ্তাহখানেক আগে ঢাকা থেকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের আমোদপুর(১ম) নিজ গ্রামের বাড়িতে আসে অন্তরা। বাড়িতে এসে একাই থাকছিল ঘরে, নিজে রান্না করে খেত। তিন দিন আগে চাচাতো বোন লিজাকে নিয়ে অন্তরা হাত রাঙিয়েছিল টুকটুক লাল মেহেদিতে। সে ওই গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার মেয়ে। তিন ভাই ও দুই বোনের মাঝে অন্তরা সবার ছোট। ঢাকা থেকে তার বাবা-মা প্রতিদিন মোবাইলে অন্তরার খোঁজ-খবর নিতেন।
কিন্তু গত ১২ জানুয়ারি রোববার সারাদিন অন্তরার নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার নম্বর বন্ধ দেখায়। পরে ওইদিন সন্ধায় বাড়ির লোকজনের নম্বরে কল দিয়ে অন্তরার খোঁজ নিতে বলেন তার বাবা-মা। সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজন অন্তরাদের ঘরের দরজা লাগানো দেখে ভাবে অন্তরা ঢাকায় চলে গেছে। অন্তরার বাবা ফের কল করলে বাড়ির লোকজন রোববার রাত ৯টার দিকে অন্তরাদের টিনশেড ঘরের ছিদ্র দিয়ে দেখতে পান- ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে অন্তরা। এসময় তারা চিৎকার করলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০ টার দিকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এদিকে অন্তরার বাবা জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ও বোন ঝিনুক আক্তার বলেন, ‘অন্তরা এক বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভোগছিল। বেশ কয়েকবার ডাক্তার দেখানো হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। তারা জানান, অসুস্থ হওয়ার পর থেকে কেন জানি অন্তরা তার মা নাসিমা খাতুনকে সহ্য করতে পারতো না।
অপরদিকে অন্তরার মা নাসিমা খাতুন মেয়ের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। অন্তরার মৃত্যুতে সন্দেহ রয়েছে মায়ের।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘরের ছাউনির সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিল অন্তরা। তার বিচানার বালিশের নিচ থেকে একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অন্তরা ঠিক কি কারণে এমনটি করেছে তা বলতে পারছে না কেউ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল করা হয়। ময়নাতদন্তের লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কেকে/এজে