চাষাবাদের অনুপযোগী হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় কৃষি বিপ্লবের সূচনা হয়েছে সরিষা চাষের মাধ্যমে। চলতি বছর ১৪০ হেক্টর পতিত জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১০ হেক্টর বেশি। এর ফলে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে উপজেলা কৃষি বিভাগ ২৭০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বারি সরিষা-৯, বারি সরিষা-১৪, এবং বিনা সরিষা-১১ জাতের উন্নতমানের বীজ ও সার বিতরণ করেছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছর ১৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ থেকে ১৮৬ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর থেকে আনুমানিক ৭৪,৫০০ লিটার ভোজ্য তেল উৎপাদন হবে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
চিকারকান্দি গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, এই বছর প্রায় ৭ কেয়ার (২ একর ১০ শতক) জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সরকারি সহযোগিতায় বিনামূল্যে বীজ পেয়েছি। খরচের তুলনায় এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। আশা করছি ভালো লাভ হবে।
শিমুলবাঁক ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের শহিদ মিয়া বলেন, আমাদের অঞ্চলে পানি সংকট বেশি, তবে কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেয়েছি। এবার ৪ কেয়ার জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ফলন দেখে লাভের আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানিয়েছেন, বুরো ফসলের অনুপযোগী জমিতে সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সার ও বীজ বিতরণের পাশাপাশি নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে এবং আমরা আশাবাদী লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
সরিষা চাষে কম খরচে ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষকরা দারুণ খুশি। পতিত জমি ব্যবহারের ফলে জমিগুলোও চাষাবাদের জন্য উপযোগী হচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোগ কেবল কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নতিই নয়, বরং স্থানীয় ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কেকে/এএম