রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে গণ কুরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির শহিদ মিনার মুক্তমঞ্চে দাওয়া কমিউনিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাঈন উদ্দীন খান বলেন, পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে মুসলমানদের হৃদয়ে তারা আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের দেশটা ভালোভাবে চলুক তারা চায় না। আগস্ট বিপ্লবের পরে তারা চাচ্ছে আমাদের ক্যাম্পাস অচল হয়ে যাক, শুধু ক্যাম্পাস না দেশের মধ্যে তারা লুকিয়ে থেকে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে এখনও। আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের এই চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছে। তারা যে কর্মকাণ্ড করেছে তাদের উচিত জবাব দিতে এই কর্মসূচি করা দেখে আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমি চাই এ রকম কর্মসূচি শুধু শহিদ মিনারে নয়, প্রতি হলে হলে হোক।
আয়োজক কমিটির সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুয়েবুল হাসান বলেন, রাবির আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র কুরআনে আগুন দেওয়া এবং চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে মুসলমানদেরকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে চক্রান্তকারীরা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর যে চেষ্টা চালানো হচ্ছে আমরা তার শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি, আজকের এই গণ কুরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি তারই অংশ। যারা এই ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয় এক শিক্ষার্থী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র আল কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। কে বা কারা এই কর্মকাণ্ড করেছে তার কোনো হদিস এখনো পাইনি। তবে তাদের এই কর্মকাণ্ডের বিপরীতে আমরা কুরআনের বাণীর সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরাগণ কুরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করেছি। আমরা আমাদের কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকব ইনশাআল্লাহ।
এ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রোববার (১২ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৬টি আবাসিক হলে পবিত্র কুরআন শরিফে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।
কুরআন পোড়ানোর এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে ৩ কার্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেকে/এএম