ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে এলাকাবাসীর আবেদন
আবিদুর রহমান নিপু, ফরিদপুর
প্রকাশ: বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:৪৬ পিএম আপডেট: ১৫.০১.২০২৫ ৮:৩০ পিএম (ভিজিটর : ৩২৭)
চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল।
অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলাধীন ৩নং আলফাডাঙ্গা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুলের অপসারণ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলাধীন ৩নং আলফাডাঙ্গা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুলের ব্যাপক অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণে পরিষদের সদস্যসহ ইউনিয়নবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। নানা প্রকল্পে চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠালেও তা দীর্ঘদিনেও আলোর মুখ দেখেনি। ফলে ভুক্তভোগীরা হতাশ। সোহরাব হোসেন বুলবুল নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তার আমলে টিআর, কাবিখা, জিআর, কাবিটা, ভিজিডি, এডিবি, এলজিএসপি, ননওয়েজ, লজিক, ইজিপিপি, পরিষদের রাজস্ব, ইউপি ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফি, হাটবাজারের রাজস্ব নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করে থাকেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সদস্যের সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। তিনি আলফাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদকে অর্থ লুটপাট ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। তার বিরুদ্ধে মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসা, ঈদগাহ মাঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সরকারি অনুদানের টাকা ও বিভিন্ন গ্রামে সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে ভিজিডি তালিকা প্রণয়নে ঘুস গ্রহণসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোহবাব হোসেন বুলবুল অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করে চলছে। সোহরাব হোসেন বুলবুল অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকলকে বর্তমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় করতে আলফাডাঙ্গায় একাধিক সভা করেছেন। প্রকাশ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বিরোধী সভা করায় আলফাডাঙ্গা তার বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় তার ফেসবুক পেজে “সারা বাংলায় খবর দে, এক দফার কবর দে। এ লড়াইয়ে জিতবে কারা? শেখ হাসিনার সৈনিকেরা-জয় বাংলা” এই মর্মে উস্কানীমূলক মন্তব্য করেছিল এবং এই ছাত্র আন্দোলনকে বাঁধা দেওয়ার জন্য সে নিজেই সকলভাবে চেষ্টা চালিয়েছিল। উল্লেখ্য যে, সোহরাব হোসেন বুলবুল ইউপি নির্বাচন- ২০২২ এ সাধারণ জনগনকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদান করে রাতের আধারে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় গিয়ে এলাকার সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করে চলছে। শেখ হাসিনা সরকারের নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট চুরির মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এলাকার কোন লোক প্রতিবাদ করিতে সাহস পায়নি। তিনি তার লোকজন নিয়ে ৩নং আলফাডাঙ্গা ইউনিয়নে কয়েকটি বাড়িতে হামলা করেছেন। তার ভয়ে এলাকার গরীব মানুষ বর্তমানে খুবই অসহায় জীবন যাপন করছে। সেই সঙ্গে সোহরাব হোসেন বুলবুল ক্ষমতার দাপটে রাষ্ট্রের সম্পদ আত্মসাৎ করে চলছেন। এলাকার সাধারণ মানুষদের মামলা দিয়ে হয়রানী করে শালিশ বাণিজ্য করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।এলাকায় সাধারন মানুষকে জিম্মি করতে তার ছিলো বিশাল কিশোর গ্যাং বাহিনী। যাদের দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসীকর্মযজ্ঞ পরিচালনা করে পার্শ্বজেলা নড়াইলে পাঠিয়ে দিতো। তাই অভিযোগপত্রে সোহরাব হোসেন বুলবুলকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ পূর্বক এলাকার সাধারণ মানুষদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার মর্জি কামনা করা হয়।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুলের সঙ্গে একাধিকভার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি আত্মগোপনে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কেকে/ এএম