গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সরোবর পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে আগামী ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক মনোমুগ্ধকর পিঠা উৎসব।
শীতের কুয়াশা আর মাঘের আমেজে আয়োজন করা এই দুদিনব্যাপী উৎসব শুধুমাত্র পিঠাপ্রেমীদের জন্য নয়, বরং এটি বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে নতুনভাবে উপলব্ধি করার এক বিশেষ সুযোগ।
এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হবে গ্রামীণ মাটির পিঠার স্বাদ—ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, দুধ পিঠা এবং আরো ৩০ ধরনের পিঠার স্টল। প্রতিটি স্টল সাজানো হবে সযত্নে, যেন কোনো এক সময়ে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ পরিবেশ আবারও ফিরে আসে। মাটির হাঁড়ি, খেজুর পাতার ছাউনি, পাটখড়ির বেড়া, আর চারপাশে পিঠার ঘ্রাণ—সব কিছু মিলিয়ে যেন যেন সালামি দেওয়া হচ্ছে পুরোনো দিনের ঐতিহ্যকে।
এই উৎসবে পিঠার স্বাদ আর তৃপ্তির পাশাপাশি থাকবে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন। শিশুদের জন্য থাকছে চিত্রাঙ্কন, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং গল্প বলার অনুষ্ঠান। বড়দের জন্য গাইবেন জনপ্রিয় বাউল শিল্পীরা, নাচবেন গ্রামীণ নৃত্যশিল্পীরা, আর সন্ধ্যার পর মঞ্চে উঠবেন বহিরাগত এবং স্থানীয় শিল্পীরা, যাদের সুরের মূর্ছনায় পুরো জনপদ সুরে মেতে উঠবে। উৎসবস্থলে আলোকসজ্জার ঝলকানি, সঙ্গীতের গুনগুনানি—সব মিলিয়ে এক প্রাণবন্ত পরিবেশ তৈরি হবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, আমরা চেয়েছি, এই উৎসবের মাধ্যমে আমাদের হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের হৃদয়ে স্থায়ী করে দিতে। পিঠা উৎসব শুধু শীতের আমেজে আনন্দ খুঁজে পাওয়ার উপলক্ষ নয়, এটি আমাদের শেকড়ের সন্ধানে ফিরে যাওয়ার এক প্রয়াস। আমরা বিশ্বাস করি, এমন আয়োজন আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করবে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বহন করবে বাংলার স্বাদ ও সৌরভ।
তাদের প্রত্যাশা, এ উৎসব একদিকে যেমন দর্শনার্থীদের মন ভরাবে, তেমনি হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের গর্ব ও ভালোবাসা ফিরিয়ে আনবে।
আয়োজকদের ভাষায়, আমাদের লক্ষ্য, শুধু বিনোদন নয়, বরং সবাইকে ঐতিহ্যের সেতুবন্ধনে আবদ্ধ করা। আমরা চাই, এমন উৎসব ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকুক, যাতে প্রতিটি শীতের দিনে গ্রামীণ সংস্কৃতির উষ্ণতা সবার হৃদয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
সরোবর পার্ক এখন উৎসবের অপেক্ষায়। পিঠার রঙ, মাটির সুবাস আর সাংস্কৃতিক আয়োজনের বৈচিত্র্যে ভরে উঠছে পরিবেশ। হাসিমুখে আগত দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভাসবে পুরো জনপদ, আর পিঠার স্বাদে-সুরে উত্তরের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে পড়বে আনন্দের এই উন্মাদনা।
কেকে/এএম