মাঘ মাসের ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডা বাতাসের দাপটের হাড়কাঁপানো শীতে জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিলেও যারা মাঠে ফসল ফলায় সেই কৃষকের যেন স্থবিরতা নেই। শীত উপেক্ষা করে চলনবিল শস্য ভান্ডারখ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বোরো ধানের জমি তৈরি ও চারা রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২২ হাজার ৫ শত ১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতােমধ্যে ১ হাজার ১ শত ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানো হয়েছে। কারণ তাড়াশ উপজেলায় এ বছর ব্যাপক সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকেরা সেই সরিষা ঘরে তুলে পুরোদমে বোরো ধান লাগাবেন। চলতি বছরে উপজেলায় জিরা শাইন জাতের ব্রি ধান-২৯, ব্রি ধান-৫৮, ব্রি ধান-৭৪, ব্রি ধান -৮১, ব্রি ধান -৮৪, ব্রি ধান-৮৬, ব্রি ধান -৮৮ ও ব্রি ধান ৮৯ ধানসহ অন্যান্য জাতের ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে।
উপজেলার তালম ইউনিয়নের গুল্টা গ্রামের কৃষক আফসার আলী জানান, এলাকায় শ্রমিক সংকটে বেশি মজুরি দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। দিনরাত পরিশ্রম করে নিয়মিত পরিচর্যাও করা হচ্ছে। এ ছাড়াও গতবছরের চেয়ে এবছর খরচ বেশি হচ্ছে।
দেশীগ্রাম ইউনিয়নের আড়ংগ্রাইল গ্রামের কৃষক আবু হাসান জানান, শীত একটু কমে গেলেই কৃষকরা পুরো দমে নেমে যাবে মাঠে। সেই হিসেবে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে শতভাগ জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে ধারণা করা যাচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে তারা বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাওয়ার আশা করছেন। বোরো চাষিরা যেন সঠিকভাবে ফসল চাষাবাদ ও পরিচর্যা করতে পারে, সে দিকে লক্ষ রেখে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মাঠে গিয়ে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার সকল কৃষকদের বোরো ধান চাষে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে পুরো উপজেলায় জমির ধাণ রোপণ কাজ শেষ হবে। রোপণ শেষ হলে পরবর্তীতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য আলোক ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতি স্থাপন করা হবে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ধান আবাদ হবে বলে তিনি আশা করেন।
কেকে/এএম