খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকান্ডকে একটি পরিকল্পিত হত্যা বলে ধারণা করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কক্সবাজার সৈকত তীরের ঝাউবনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকৃতরা হলেন- খুলনার মো. সেলিম আকন এর মেয়ে ঋতু(২৪), খুলনার ৪নং ওয়ার্ড়ের মো. জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু(২৭), খুলনা ৬নং ওয়ার্ড়ের কেশলববাল এলাকার মো. হায়দার সরদার অদুদের ছেরে গোলাম রসুল(২৫)। আটককৃত তিনজন হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত বলে জানান সাংবাদিকদের জানায় পুলিশ।
এছাড়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল ৪ রাউন্ড কাতুর্জ, একটি ম্যাজিনসহ হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করেছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ। প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয় শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পুর নামে খুলনা কেএমপিতে বিভিন্ন ধারায় ৫টি মামলা রয়েছে। গোলাম রসুলের নামে খুলনা কেএমপি দৈৗলতপুর থানায় একটি মামলা আছে। আককৃতদের পরে আদালতে প্রেরণ করা হয় ।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যার ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহমেদ পেয়ারের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি বিশেষ টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর সার্কেল ও আভিযানিক টিম মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে খুলনা সিটি কপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম রাব্বানী টিপু হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামী গ্রেফতার করে এবং পরবর্তীতে আসামীদের দেওয়া তথ্যমতে কক্সবাজার সদর মডেল থানাধীন কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের কলাতলী রোড সৈকত বহুমুখী সমবায় সমিতি আবাসিক এলাকায় কক্স কুইন হোটেলের ২০৮নং কক্ষের চিলেকোঠা হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। আসামীদেরকে যথাযথ নিয়মে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান এসপির বরাতে জানান, তিনজনকেই মৌলভীবাজার থেকে মঙ্গলবার বিকেলে আটক করা হয়। তাদের কক্সবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৫৪ বছর বয়সী টিপুকে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল সী-গালের সামনে ঝাউবন সংলগ্ন ফুটপাতে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর তাকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পাশাপাশি এক চরমপন্থী নেতা হত্যা মামলায় অন্যদের সাথে তাকেও আসামি করা হয়। এ মামলার সবাই খুনের শিকার হয়েছেন। শুধু বাকি ছিলেন টিপু। তিনিও কক্সবাজারে খুন হওয়ায় পরিকল্পিত হত্যা হয় বলে ধারণা পরিবারের সদস্যদের। এ ঘটনায় গোলাম রব্বানীর ভগ্নিপতি মো. ইউনুস আলী শেখ শুক্রবার কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কেকে/এজে