রাজশাহীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে কাঁদলেন সাকিব আনজুমের বাবা মোঃ সাইদুল হক।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৯টায় নগরীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরীর এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধন করতে মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইদুল হক। বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে বিদায় করতে গিয়ে আমার কলিজার টুকরা সাকিব শহিদ হয়েছে। আমি একজন গর্বিত পিতা। আমার সাকিবের মতো হাজারও ছাত্র-জনতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়া যাবে না।’
সাকিব আনজুম রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৫ আগস্ট রাজশাহী নগরীর শাহ মখদুম কলেজের কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ সাকিব পাঁচানীর মাঠের পাশের একটি বাসায় আশ্রয় নেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই আওয়ামী সরকারের পতন ঘটে।
শনিবার রাজশাহী জেলা ও মহানগর জামায়াতের এই কর্মী সম্মেলনে সাকিব আনজুমের বাবাকে উদ্বোধক করা হয়। তিনি নগরীর আরডিএ মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সারাদেশে চাঁদাবাজি ও দখলদারির ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যারা এসব করছেন, বিনয়ের সঙ্গে বলি, এগুলো বন্ধ করেন। তবে যদি আমাদের এই বিনয়ী অনুরোধ কেউ না মানে, তাহলে আমাদের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। সন্তানেরা স্লোগান দিচ্ছে, আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। যুদ্ধ চলবে।’
দীর্ঘ ১৫ বছর পর রাজশাহীতে বড় পরিসরে প্রকাশ্যে জামায়াতের এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলী। কর্মী সম্মেলন ছাড়াও জামায়াত আমির দুপুরে চিকিৎসক সমাবেশ, বিকালে মহিলা সদস্য সমাবেশ এবং বাদ মাগরিব ব্যবসায়ীদের নিয়ে সমাবেশ করেন।
এর আগে ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে সর্বশেষ কর্মী সম্মেলন করেছে দলটি। দীর্ঘ ১৫ বছর পর রাজশাহীতে প্রকাশ্যে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় উচ্ছসিত দলের নেতাকর্মীরা। রাজশাহী মহানগর ছাড়াও জেলার নয়টি উপজেলা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা সম্মেলনে অংশ নেয়।
কেকে/এআর