গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আজকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের সঙ্গে গোলাগুলি হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন সীমান্তে তারা কাটা তারের বেড়া দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে। আমাদের কিছু ভূমি দখলের পায়তারা করছে তারা। কারন শেখ হাসিনা সরকার অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের পরিস্কার বার্তা, আমরা বেঁচে থাকতে, এই দেশের ১৮ কোটি মানুষ এই দেশের ১ ইঞ্চি জমিও ভারতকে দখল করতে দেবে না।
শনিবার ( ১৮ জানুয়ারি ) দুপুরে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উপজেলা মাল্টিপারপাস অডিটরিয়াম হলরুমে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
নুর বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলে দিতে চাই আপনারা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর যে খেলা শুরু করেছেন, সেটা বন্ধ করুন। অন্যথায় আপনাদের জন্য সেটা শুভ হবে না। সরকারকে অনুরোধ জানাবো সীমান্তবর্তী মানুষকে সামরিক ট্রেনিং দিয়ে প্রয়োজনে বিজিবিদের সঙ্গে তারাও কাজ করবে। তবুও ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের দেশের একটা লাশ পড়লে ওপারের দুইটা লাশ ফেলাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার শতাধিক পণ্যে কর এবং শুল্ক বাড়িয়েছে। টিস্যুতে, ওষুধ, রেস্টুরেন্টে, মোবাইলের কথা বলবেন সেখানেও ভ্যাট ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। শুল্ক ও কর বাড়ার এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত মানুষের জন্য আরও ভোগান্তি হবে। এমনিতে মানুষের হাতে টাকা নেই, দেশের বিনিয়োগ নেই, নতুন কর্মসংস্থান নেই, এই আন্দোলন সংগ্রামে বিভিন্ন শিল্প খাতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন সরকার মানুষকে কিভাবে স্বস্তি দিবে, কিভাবে মানুষের এই কষ্টে আগুন নিভানোর জন্য পানি ঢেলে দেবে, সেইটা না করে সরকার পেট্রোল ঢেলে দিয়েছে। যে পেট্রোলে এখন টের পাচ্ছেন না, কয়েকদিন পরে ঠিকই মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখাবে। মানুষ এখন আন্দোলন করতেছে না কারণ মানুষ মনে করেছে কয়েকদিন আগে আন্দোলন করে এই সরকারকে বসিয়েছি। এখনই যদি সরকারের বিরুদ্ধে নামি শুধুমাত্র এই সেন্স থেকে সরকারের বিরোধিতা করছে না। তাই বলে সরকার যা ইচ্ছা তাই করবে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সেটাকে সমর্থন দিব না।
আওয়ামী লীগ সম্পর্কে ডাকসুর ভিপি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন একটা মড়া লাশ। এই মড়া লাশকে টানাটানি করে সান্তনা ছাড়া আর কিছু নাই। কোনভাবেই এই আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া যাবে না। কারন আওয়ামী লীগ যদি আবার কোনভাবে ফিরে তাহলে তারা আবার ২০০৮ সাল থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত যে নারকীয় তান্ডব করেছে শেখ হাসিনাবাদ কায়েম হয়েছে। এর চেয়েও ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ৫ আগষ্টের আগে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ছিল। এই ঐক্যে ফাটল ধরেছে। দলগুলোর মধ্যে যত ফাটল ধরবে ফ্যাসিবাদ তত তারাতারি ফিরে আসার সুযোগ পাবে।
স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে নুর বলেন, আজকে একটা প্রথম সারির পত্রিকায় পড়েছিলাম দেশের ৬৫% মানুষ জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায়। আমরাও দলের পক্ষ থেকে বলেছি জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া হয় তাহলে মানুষের মাঝে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। মানুষের রাজনৈতিক সম্পর্কে একটা ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। কিন্তু নির্বাচিত রাজনৈতিক দল এককভাবে সরকার গঠন করে তখন তারা স্থানীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবে।
এসময় গণধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসান রংপুর-১ আসনে গণঅধিকার কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদ ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয়ক হানিফ খান সজিব কে আগামী নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেন।
গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদ ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয়ক হানিফ খান সজিব এর সভাপতিত্বে ও গণঅধিকার পরিষদ রংপুর জেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শেরে খোদা আসাদুল্লাহ এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন গণঅধিকার পরিষদ রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা মোন্নাফ, রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম খোকন, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য হাজী মো. কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল হক, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শিশির প্রমুখ।
কেকে/এইচএস