গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নে তিন একর ৬১ শতাংশ তথা এগারো বিঘা জমি ২০ বছর পর উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান সুদারুর অবৈধ দখলে ছিল।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের পূর্ব বেলকা গ্রামে জমি উদ্ধার করা হয়। বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের সহযোগিতায় জমি দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আব্দুর রহমান সুদারু উপজেলার বেলকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং মধ্য বেলকা গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে।
জানা যায়, আব্দুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে এ জমিটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিলেন। তিনি এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাব কাজে লাগিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন। জমির প্রকৃত মালিকরা বহু বছর ধরে তাদের অধিকার ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে আসছিলেন। বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে কয়েক দফা আবেদনের পর জমির সঠিক মালিকানা নিশ্চিত করা হয়। এক ফয়সালার মাধ্যমে আজ জমি উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
জমি ফিরে পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মৃত আফাজ উদ্দিন ব্যাপারির ছেলে রেজাউল আলম, মকিজল মেকারের ছেলে মমিনুল ইসলাম, মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে নুরুল ইসলাম, আব্দুল জলিলের ছেলে হায়দার আলী, ওমর উদ্দিনের মেয়ে ওমেদা বেগম, আব্দুল মুন্সী শমছেল মিয়া, তরিকুল্লাহ সোনারের ছেলে নছর শেখ, জহুর উদ্দিন শেখের ছেলে আজিজুল হক, শেয়ালু শেখের ছেলে ইছাহক আলীসহ আরও কয়েকজন।
দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর জমি ফিরে পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে রেজাউল আলম বলেন, ২০ বছর ধরে আমরা এই জমি ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। আজ জমি ফিরে পেয়ে মনে হচ্ছে আমাদের অধিকার পুনরুদ্ধার হয়েছে। আমরা গ্রাম আদালত ও ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞ।
জমি ফিরে পাওয়া হায়দার আলী বলেন, আমাদের জমি এতদিন অন্যের দখলে ছিল। আজ এটা আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। ইউনিয়ন পরিষদের এ ধরনের উদ্যোগ সবসময় অবিচারের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে বলে আশা করি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, বহু বছর ধরে জমি উদ্ধারের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। গ্রাম আদালত ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ জমি উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এবিষয়ে বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ বলেন, গ্রাম আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং আজকের ফয়সালা সেটির প্রমাণ। সবার সহযোগিতার ফলে জমি উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমরা এলাকার মানুষের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থাকব।
কেকে/এইচএস