নীলফামারীর সৈয়দপুরে এবার এক কলেজ থেকে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ৫৩ শিক্ষার্থী। সুনামধন্য ওই কলেজটির নাম সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ।
গত বছর (২০২৩-২০২৪ সেশন) ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৫২ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পায়। কলেজটির এমন সাফল্যের ধারাবাহিকতায় খুশি অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ জেলাবাসী।
কলেজটি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) অংশ নিয়েছেলেন ২৬২ জন। তার মধ্যে শতভাগ পাশ করে জিপিএ-৫ পায় ২৫৫ জন। পাশ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেডিক্যাল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ৫৩ জন।
কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান জানান, ২০২৪ সালে ৫২ জন, ২০২৩ সালে ৩৬ জন, ২০২২ সালে ৪৫ জন, ২০২১ সালে ৪০ জন, ২০২০ সালে ৩৮ জন ২০১৯ সালে ৩৬ জন, ২০১৮ সালে ৩৯ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়।
উল্লেখিত বছরগুলোতে শিক্ষার্থীরা বুয়েট, চুয়েট, রুয়েট ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এবারে ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলফল বের হলে এ সংখ্যাটি আরো বাড়বে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া কলেজের (সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ) শিক্ষার্থী সুমাইয়া শারমীন বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল মেডিকেলে পড়ার। নিয়মিত অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমে সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর বালাপাড়া গ্রামে। বাবা মো. শফিয়ার হোসেন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। তিন বোনের মধ্যে সুমাইয়া সবার বড়। ভর্তি পরীক্ষায় তার স্কোর ১৮৫।
২০২২ সালে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এইচএসসিতে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ভর্তি হয়। তিনি জানান, কলেজে নিয়মিত ক্লাস ও প্রতিটি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুশৃঙ্খল শিক্ষার পরিবেশ, পাঠদানের সকল শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং কঠোর তদারকির কারণে প্রতি বছর আশানুরূপ ফলাফল বয়ে আসছে। কলেজে কঠোর নিয়মকানুণের কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস আসে।
এতে করে সার্বক্ষণিক লেখাপড়া ও শিক্ষকদের সংস্পর্শে থাকে। আর কলেজে বছরের নির্ধারিত পরীক্ষার পাশাপাশি ক্লাস টেস্ট, মডেল টেস্টসহ আরো অনেকগুলো পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ফলে পরীক্ষার ভীতি অনেকাংশে দূর হওয়াসহ প্রস্তুতি ভালো হয়।
তিনি জানান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রতিবছর বোর্ড পরীক্ষা ঈর্ষান্বিত ফলাফলসহ মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্যের ধানাবাহিকতা আসছে প্রতিষ্ঠানের।
১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজটি। সে সময়ে প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি বিজ্ঞান স্কুল। ১৯৭৭ সালে সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজ নামকরণ করা হয়। এরপর ২০১৯ সালে আবার পরিবর্তন করে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ নাম হয়।
কেকে/এএম