শীতকালীন বারি-৮ জাতের টমেটো চাষে লাভবান হয়েছেন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার জালালের ঢাল গ্রামের কৃষক ওসমান গনি।
তিনি মাত্র দেড় বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন। বর্তমান সময় তাকে দেখে এলাকার অনেকেই বারি-৮ জাতের টমেটো চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টমেটো চাষে কৃষক ওসমান গনি মালচিং পেপার ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। খেতে জৈব বালাইনাশক দেওয়া হয়েছে। এতে বিষমুক্ত টমেটো উৎপাদন হয়।
খেত থেকে এসব টমেটো সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। পাইকাররা এসব টমেটো প্রতি কেজি বাজারে বিক্রি করেন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত।
কৃষক ওসমান গনি বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হকের পরামর্শে তিনি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে শীতকালীন টমেটো জাত বারি-৮ আবাদ করে সফলতা পান। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচে ৬০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি হয়েছে। আরো কিছুদিন বিক্রি থেকে ২০ থেকে ৩৯ হাজার টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা। তাই আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের টমেটো চাষ করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, লাভজনক পদ্ধতিতে শীতকালীন টমেটো ও পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে মালচিং পেপার দিয়ে শীতকালীন টমেটো চাষ করে কৃষক ওসমান গনি লাভবান।
তিনি আরো বলেন, বারি-৮ নামে নতুন জাতের শীতকালীন টমেটো চাষে ইতোমধ্যে উন্নত জাতের এই টমেটো চাষে ব্যাপক ফলনও পেয়েছেন তিন। ভালো দাম পাওয়ায় ভাগ্য বদলাচ্ছে তাদের। বারি-৮ টমেটো খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। ফলে তারা দামও পাচ্ছেন ভালো। কৃষকরা বলছেন অধিক ফলন আসায় এ টমেটো চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। তাই আগামীতে আরো বেশি জমিতে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় প্রতিটি গাছেই প্রচুর পরিমাণ টমেটোর ফলন এসেছে।
তিনি বলেন, বারি-৮ টমেটোর ফলন অন্যান্য জাতের চেয়ে ফলন প্রায় দ্বিগুন। প্রতিটি গাছে ৩০/৪০ টি ফল ধরে এবং গাছপ্রতি ফলন হয় প্রায় ১৫ কেজি।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য টমেটোর গড় ওজন ৩০ থেকে ৩৫ গ্রাম ওজন হলেও নতুন এ জাতের টমেটোর গড় ওজন ৫০ গ্রামেরও বেশি। এছাড়া চারা লাগানোর মাত্র ৬০ দিনের মধ্যেই ফল পাকতে শুরু করে।
আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সজীব আল মারুফ বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় পরীক্ষামূলক বারি টমেটো-৮ চাষ করা হয়। এসব কৃষকদের এ টমেটো চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার, কীটনাশক ও হরমোন দেওয়া হয়। কৃষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ টমেটো চাষে দক্ষ করা হয়।
তিনি বলেন, অন্যান্য জাতের চেয়ে এ টমেটোর আকার বড় ও কালার হওয়ায় তারা বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন। তিনি বলেন, আবহাওয়ার সাথে শতভাগ সামঞ্জস্য এ নতুন জাতের টমেটো চাষে আগামীতে কৃষিতে বিপ্লব সৃষ্টি করবে।
কেকে/এএম