বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫,
৯ মাঘ ১৪৩১
বাংলা English

বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: সাবেক সিটি মেয়র আতিক তিন দিনের রিমান্ডে      মালয়েশিয়ায় যেতে ব্যর্থ কর্মীদের কারওয়ান বাজারে অবস্থান      বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি, সতর্কতা জারি      রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর      থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক      বিএনপি ২০০ আসন পেলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে: আমীর খসরু      লন্ডনে খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না       
মুক্তমত
চাঁদাবাজির মূলোৎপাটন : রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংস্কার
ফরিদ উদ্দিন রনি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:৩৩ পিএম  (ভিজিটর : ২৬)

গণমাধ্যমের খবরে চোখ মেললেই প্রতিনিয়ত নজরে আসে কোথাও না কোথাও চাঁদাবাজির খবর। ফুটপাত থেকে শাকসবজি, মাছ-মাংসের বাজার, টেম্পোস্ট্যান্ড এমনকি কবরস্থান— সব জায়গায় চাঁদাবাজির খবরে সয়লাব প্রতিটি গণমাধ্যম। কখনো কখনো চাঁদাবাজিতে নিজেদের একাধিক গ্রুপ আন্তঃকোন্দলে জড়িয়ে খুনাখুনি পর্যন্ত হচ্ছে।

৫ আগস্টপরবর্তী এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখলে দেখা যায় বেশির ভাগ অভিযোগই আসছে বিএনপিসংশ্লিষ্ট স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। দলের মানহানি করা চাঁদাবাজদের দমন করতে কঠোর ব্যবস্থাও নিচ্ছে দলটি। দলীয় হাইকমান্ড কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তার দলীয় পদপদবি বাতিল করছে। একাধিক ভিডিও বার্তায় অন্তর্বর্তী সরকারকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলছেন, চাঁদাবাজদের ধরে জেলে ভরতে। কিন্তু এতকিছুর পরও কমছে না স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, দখলবাজি, মাস্তানির উৎপাত। কেন চাঁদাবাজিতে এতটা বেপরোয়া স্থানীয় নেতাকর্মীরা?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সমস্যার মূলে যাওয়া দরকার। আমাদের রাষ্ট্র কাঠামোতে কীভাবে চাঁদাবাজির অবস্থা জিইয়ে রাখা হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন বোধ করছি। ফুটপাতে যত দোকানপাট আছে তা আইন অনুসারে অবৈধ। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনগুলো ক্ষমতার বলয়ে এসব ‘অবৈধ ব্যবসাপাতি’কে বৈধতা দিয়ে থাকেন। বিনিময় এক পক্ষ পায় রাষ্ট্রীয় আইন-কানুনের ঝামেলা থেকে নিরাপত্তা অন্য পক্ষ আদায় করেন মোটা অঙ্কের চাঁদা। যার ফলে প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলো নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজিতে ঠেকাতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও পুরোপুরিভাবে ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রয়োজন একই সময়ে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক দলের ভেতর সংস্কার। একটা ব্যতিরেকে অন্যটার সংস্কার করতে গেলেও তা সিস্টেমে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে না।

বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের তথ্যানুসারে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন ফুটপাতে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার অস্থায়ী দোকানপাট আছে। ঈদ কিংবা শীত মৌসুমে সেসব অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৩ লাখের কাছাকাছি। দেশের আইন অনুসারে এসব দোকানপাট অবৈধ। ফুটপাত জনসাধারণের হাঁটাচলার জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা। সেখানে দোকানপাট খুলে চলছে হরহামেশা ব্যবসা। এতসব অবৈধ দোকানি, তাদের কোন পদ্ধতিতে বৈধতা দিয়ে থাকেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী? এমনকি কীভাবে তারা দিনের পর দিন ফুটপাতে সে সিস্টেমের ভেতর বেচাকেনা অপারেট করে যাচ্ছেন?

ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাটের ক্ষুদ্র বিক্রেতারা দেশের আইনকানুনের ধার ধারেন না। রাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বৈধতা কিংবা অবৈধতা নিয়ে কখনো প্রশ্ন ওঠে না। তাদের ‘দেওয়া এবং নেওয়া’ সম্পর্ক গড়ে ওঠে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে। ফলত, এসব দোকানপাটের ক্ষুদ্র বিক্রেতারা বেছে নেন স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলকে। যারা তাদের বৈধতা দেন রাষ্ট্রের আইনকানুন থেকে, মামলা-মকদ্দমার ঝামেলা কিংবা আশপাশর অন্য যে কোনো দোকানি কিংবা সাধারণ মানুষের যে কোনো বাধাবিপত্তি থেকে দিয়ে থাকেন শেল্টার। বিনিময়ে তাদের কাছে থেকে করেন চাঁদা আদায়। তাদের এসব বৈধতা হয় কয়েকটি পদ্ধতিতে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারি রাস্তাঘাট, ভূমি দখল করে (বড় দোকানের ক্ষেত্রে) মাসিক কিংবা বাৎসরিক ইজারা দিয়ে থাকেন। ফুটপাতে বেশির ভাগ দোকান ফুট হিসেবে, চকি/টেবিল হিসেবে ভাগ করে দিয়ে দৈনিক চাঁদা আদায় করে থাকেন। এ চাঁদার ভাগ একটা অংশ যায় সেই এলাকার দায়িত্বরত পুলিশের পকেটে, একটা অংশ যায় ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের পকেটে, আরেকটা অংশ পান লাইনম্যানরা। যারা মূলত ফুটপাতের এসব অবৈধ দোকানপাটের সিন্ডিকেট দেখভাল করেন এবং চাঁদা উঠিয়ে নেতাদের হাতে পৌঁছান।

৫ আগস্ট পূর্ববর্তী বৈধ ও অবৈধ হাটবাজার, ফুটপাত সবখানে চাঁদা আদায় করতো আওয়ামী লীগ সরকারের অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তাদের নেতাকর্মীদের পলায়নের পর চর দখলের মতো ফুটপাত অবৈধ এসব দোকানপাট, হাট-বাজার, টেম্পোস্ট্যান্ড দখল নেওয়ার অভিযোগ আসতেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় ও জামায়াতসংশ্লিষ্ট কর্মীরা জড়ানোর অভিযোগও আসছে গণমাধ্যমে। চাঁদার ভাগবাঁটোয়ারা কিংবা ইজারা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যখন সংঘাতে জড়াচ্ছেন নিজেদের একাধিক গ্রুপ, তখনি সেই খবর গণমাধ্যমে আসছে।

রাষ্ট্র তার কাঠামোতে ফুটপাতের এসব অবৈধ দোকানপাট, মাছ-মাংসের বাজার, সবজি বাজার জিইয়ে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো যতই নিজেদের সংস্কারের চেষ্টা করুক, কর্মীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের কঠোর ব্যবস্থা নিক, তাতে খুব বেশি একটা সাসটেইনেবল হতে দেখা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ক্ষমতার এসব অনৈতিক চর্চা সমান্তরাল। ফলত, রাষ্ট্র তার কাঠামোতে পরিবর্তন আনা ব্যতিত কখনো চাঁদাবাজি রোধ করা সম্ভবপর নয় বলে মনে করি।

রাষ্ট্রকে ফুটপাতে থাকা সব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। অবৈধ হাটবাজার, যত্রতত্র গাড়িরস্ট্যান্ড বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এসব জায়গায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে জীবনযাপন করা ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে সাসটেইনেবল পদ্ধতি খুঁজে বের করতে কাজ করতে হবে। তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে তাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক হবে রাষ্ট্রের আইন-কানুনের; কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ক্ষমতাসীন ব্যক্তির নয়। তারপর বিদ্যমান সব রাজনৈতিক দলগুলোকে তা অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমানে বিশেষ কোনো দল ক্ষমতায় নেই, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। তাই এ সরকারকে এসব নিয়ে কাজ করা জরুরি। তাদের দায়িত্বও বর্তায়। গণঅভ্যুত্থানপরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের সামনে। ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাটের মাধ্যমে অবৈধ-ব্যবসার যে প্রতিষ্ঠিত চেইন বিদ্যমান, তা বন্ধ করতে হবে রাষ্ট্রকে। বাজার সিন্ডিকেটের মূলে গিয়ে সমস্যার কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। যে কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে সিস্টেমের ভেতর এসব অবৈধ বাণিজ্যের রাস্তা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভবনা ক্ষীণ। কারণ, এতে বাই ডিফল্ট বেনিফিশারি তাদের দলের নেতাকর্মীরাই।

আবার এখানে যে প্রশ্নের অবতরণ হয়, সরকার রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন আনলেও চাঁদাবাজি পুরোপুরি বন্ধ হবে এমনটা হলফ করে বলা যাবে? যেসব বৈধ হাটবাজার আছে, গাড়িস্ট্যান্ড আছে সেসব জায়গায়ও সমানতালে টেন্ডারবাজি, দখলদারি, চাঁদাবাজি চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে কী আদৌ সম্ভব তাদের কর্মীদের পুরোপুরি শৃঙ্খলার ভেতর রাখা?

 এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজতে মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতার নিরিখে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মীদের সামাজিক অবস্থা ও পারিপার্শ্বিকতা বুঝা দরকার। দেশে বর্তমান ইউনিয়নের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭৯টি। প্রতিটি ইউনিয়নে গড়ে ১০টি ওয়ার্ড থাকলে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ৭৯০টি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি ধরে একটি রাজনৈতিক দলের তিনটি অঙ্গসংগঠনের থাকলে মোট কমিটির সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭০টি। প্রতিটি কমিটিতে ন্যূনতম সদস্য সংখ্যা ১০ জন হলেও মোট সদস্যদের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ জন। এত বিশাল সংখ্যক কর্মী বাহিনী পুরোদমে রাজনীতি করছেন তাদের জীবন-জীবিকা চলে কীভাবে? তাদের আয়ের উৎস কী, তারা পরিবার-পরিজনের খরচ মেলান কোথা থেকে? পুরোদমে রাজনীতির বাইরে কতজন ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি করার সুযোগ পান? কমিটিতে যারা পদ-পদবি পান তাদের পক্ষে রাজনীতির বাইরে কাজকর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করার পরিসংখ্যান খুবই কম। নেই বললেই চলে। কারণ, এই বিশালসংখ্যক ফোর্সকে ওপর মহল যেমন— ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা উত্তর-দক্ষিণ, জেলা পূর্ব-পশ্চিম, জেলা, মহানগর, বিভাগ, কেন্দ্র— এসব নানা স্তরের বড় নেতাদের ভ্যানগার্ড হিসেবে সর্বত্র মাঠে সক্রিয় থাকতে হয়। মিছিল-মিটিংয়ে নেতাদের নামে স্লোগানে রাজপথে থাকতে হয় সর্বদা সক্রিয়। রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নস্তর থেকে উপস্তর প্রতিটি ধাপে ধাপে নেতাকর্মীর ভ্যানগার্ডের যে শিকল, রাজপথে সদা যে শিকল মেইনটেইন করে কর্মীদের জীবনযাপন করতে হয় তাতে তাদের পক্ষে রাজনীতির বাইরে চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ আদৌ থাকে কিনা, সেটা প্রশ্নের বিষয়।

গত বছর প্রকাশিত ইসির তথ্যানুসারে, দেশে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৩৫০টি। প্রতি কেন্দ্রে ১০টি করে বুথ থাকলে, প্রতি বুথে একটি দলের ন্যূনতম ৩ জন এজেন্ট দায়িত্ব পালন করলে সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ জন। এদিক থেকে চিন্তা করলেও দেখা যায় বিশালসংখ্যক কর্মীবাহিনী পুরোদস্তুর রাজনীতিতে মিশে আছেন একেকটি দলের সঙ্গে। তারা দলের জন্য রাত-দিন খাটছেন। এ বিশালসংখ্যক কর্মী বাহিনী যারা পুরোদমে রাজনীতি করেন তাদের জীবন-জীবিকা চলে কীভাবে? এ প্রশ্ন নেতারা কখনো নিজেদের করে থাকেন, যারা কর্মীদের নিজের এবং দলের জন্য ভ্যানগার্ড হিসেবে খাটান! যখন স্থানীয় নেতাকর্মীদের বৈধ আয়ের উৎসের পথ বন্ধ হয়ে যায় তখন তারা আয়ের অন্যতম উৎস বানিয়ে ফেলেন স্থানীয় হাটবাজার, টেম্পোস্ট্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড, সেতু, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, দখলদারি। পাতি নেতা থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বড় নেতারা করেন দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি পুরোপুরিভাবে বন্ধ করতে হলে নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে কর্মীদের জীবনযাপনের খরচে। যারা পুরোদমে দলে সময় দেন, নেতাদের ডাকে ছুটে যান রাজপথে, তাদের ভ্যানগার্ড হয়ে মাঠে শ্রম দেন, সেইসব নেতাকর্মীদের বেতন-ভাতা সিস্টেম চালু করতে হবে। তাদের পরিবার পরিজনের ভরণপোষণের খরচ দলকে বহন করতে হবে। অন্যথায় রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে পরিবর্তন এনে চাঁদাবাজি সব স্কোপ বন্ধ করে দিলেও চাঁদাবাজি, দখলবাজি বন্ধ করা যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা এসব নিয়ে না ভাবলে দলের ভেতর যতই নিজেদের সংস্কার করার কথা বলুক, কর্মীদের শৃঙ্খলা ভঙ্গের শাস্তি দিক তাতে চাঁদাবাজি, দখলদারি বন্ধ করা সম্ভব হবে না। ফুল টাইম রাজনীতিতে সময় দেওয়া নেতাকর্মীদের বেতন-ভাতার উদ্যোগ গ্রহণ না করে অন্য যে সংস্কারের মাধ্যমেই নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলার ভেতর আনতে চেষ্টা চালাক তাতে দীর্ঘমেয়াদি কার্যকরী হবে না।

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সিন্ডিকেট ও হাটবাজারে চাঁদাবাজি একটি-আরেকটির সঙ্গে সম্পূরক। এসবের চেইন ভাঙতে হলে আগে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। ফুটপাতের সব অবৈধ দোকানপাট, অবৈধ হাট-বাজার, টেম্পুস্ট্যান্ড বন্ধ করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। জীবিকা নির্বাহের জন্য এসব জায়গার ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ভেতর সংস্কার করতে হবে। দলের জন্য পুরোদমে শ্রম দেওয়া নেতাকর্মীদের জন্য বেতনভাতা (কর্মঘণ্টার ভিত্তিতে), উপহারের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য আলাদা দলীয় ফান্ড করা যেতে পারে। প্রথমদিকে এটি বাস্তবায়নে বেগ পোহাতে হবে, কিন্তু এটি একবার বাস্তবায়ন করা গেলে রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের জন্য ফলপ্রসূ হবে। মানুষ মুক্তি পাবে বাজার সিন্ডিকেট থেকে এবং ব্যবসায়ীরা মুক্তি পাবে চাঁদাবাজি থেকে।

লেখক : সাংবাদিক

কেকে/এএম

মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

হল্যান্ডের ড্যানিসপো কোম্পানির বীজ আলুর গাছ পরিদর্শনে ইউএনও
ক্ষমতা গ্রহণের একদিন পরেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা
মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমালে হতে পারে যেসব ক্ষতি
শিশুরাও ছিল হাসিনার আয়নাঘরে, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ
সাবেক সিটি মেয়র আতিক তিন দিনের রিমান্ডে

সর্বাধিক পঠিত

শরীয়তপুরে গরুর খামারে মিলল সাতটি হাতবোমা
লন্ডনে খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না
শিশুকে পুকুরে ফেলে দেওয়া সেই শিক্ষক কারাগারে
জাতীয় নির্বাচনের পর বাকৃবিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন
ক্যান্সার আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে চায় হাবিপ্রবি শিক্ষার্থী মিহির

মুক্তমত- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝