সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থী প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুটি পদেই জয়লাভ করেছেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। অভিযোগ, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ঢিলেমি আর নিরবতার কারণে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এই নির্বাচনে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। যদিও বিএনপি নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তারা নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা নোটিশ এ কথা জানানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য জেলা বা মহানগর বিএনপি যথাযথ উদ্যোগ নেয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদাসীন ও নির্বিকার ভূমিকার জন্য নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলের বিপর্যয় ঘটে।
এদিকে, নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলের ফল বিপর্যয়ের কারণে বিএনপির সিলেট জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ চার নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। চার নেতা হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমেদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
দায়িত্বহীনতার কারণে সিলেট বিএনপির চার শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সে বিষয়ে একটি লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ জবাব জমা দিতে হবে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, দলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। নির্দেশনা মেনে যথাসময়ে নোটিশের জবাব দেবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের কারণে গত রোববার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ফোরামের সিলেটের কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি জানানো হয়। এ ছাড়া বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে সংগঠনটি ওই দিন তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে। কমিটিকে সরেজমিন অনুসন্ধান ও ফোরামের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৬ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৬টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১২টিতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপিপন্থী ছয়জন ও জামায়াতপন্থী পাঁচজন জয় পেয়েছেন।
জানা গেছে, নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। অনেকেই দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তে আওয়ামী লীগপস্থী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেন। তাদের জেতাতে বিএনপি ঘরানার ভোটাররাও সক্রিয় ছিলেন। এ অবস্থায় বিএনপিপন্থী বেশিরভাগ আইনজীবী নির্বাচনে পরাজিত হন। এ নিয়ে দলের ভেতর-বাইরে আলোচনা সমালোচনা চলছে।
কেকে/এমএস