বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫,
৯ মাঘ ১৪৩১
বাংলা English

বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: বিএনপির ৩১ দফার মাধ্যমে দেশকে নতুনভাবে সাজাতে হবে      রাতের ভোটের কুশীলবদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক      মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা      ওষুধ ও মোবাইল কলরেটে বর্ধিত কর প্রত্যাহার      বিমানে তল্লাশি চালিয়ে বোমা সদৃশ কিছু পাওয়া যায়নি      সাবেক সিটি মেয়র আতিক তিন দিনের রিমান্ডে      মালয়েশিয়ায় যেতে ব্যর্থ কর্মীদের কারওয়ান বাজারে অবস্থান      
গ্রামবাংলা
বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ‘ঢেঁকি’
জহিরুল ইসলাম মিলন, ধনবাড়ী (টাঙ্গাইল)
প্রকাশ: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:০১ পিএম আপডেট: ২২.০১.২০২৫ ৩:০৬ পিএম  (ভিজিটর : ৫৬)
বিলুপ্তপ্রায় বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি। ছবি: প্রতিনিধি

বিলুপ্তপ্রায় বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি। ছবি: প্রতিনিধি

‘বৌ ধান বানরে উঠানে বসিয়া, আমি নাছি তুমি নাচ হেলিয়া ধুালয়া বৌ ধান বানরে’। নেচে গেয়ে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ‘ঢেঁকি’ দিয়ে চালগুড়া করার প্রাচিন এই পদ্ধত্বি বিলুপ্ত প্রায়। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি, আজ হারিয়ে যেতে বসেছে । অতীতে গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে ছিলো কাঠের তৈরি এ ঢেঁকি। আজ সারা গ্রাম খুঁজলে ১/২ ঢেঁকি পাওয়া যায় ।
  
৭০ বছর বয়সী জমেলা বিবি বলেন, আমাদের সময় অনেক মহিলা ছিলো যারা এ বাড়ি ও বাড়ি ঢেঁকি দিয়ে ধান ভেনে ( চাউল তৈরী করে) সংসার চালাত, আজ সে সব মহিলারা বেকার। ঢেঁকিতে তৈরি চাল দিয়ে ভাত রান্না বা চালের গুড়া দিয়ে পিঠা তৈরি করে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। কয়েক বছর আগেও ঢেঁকির ধুমধাম শব্দ শুনলে মানুষে বুঝতে পারতো, ঐ বাড়িতে নতুন কুটুম বা জামাই  এসেছে। 

অতিথীদের জন্য তৈরি করা হতো রসের পায়েস, দুধের  পিঠা, রসের পিঠা, পুলি পিঠা, দুধ খেজুর পিঠা, চিতল পিঠা, মেরা পিঠা,তেলের  পিঠা,চিকন পিঠ, সহ বিভিন্ন প্রকার পিঠা তৈরী করা হত। বিশেষ করে শীত কাল বা পৌষ মাসে জামাই, মেয়ে, ভাগ্নে ভাগ্নি এমনকি বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন শহর থেকে ছুটতো গ্রামে পিঠা খাওয়ার জন্য। বাড়িতে বাড়িতে বসতো পিঠা তৈরির উৎসব। এ সকল উৎসব আজ বিলুপ্তির পথে, তার কারণ ঢেঁকি।

পাইস্কা হরিনা তেলি গ্রামের ৬৫ বয়সে ফজর আলী বলেন, ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত  ধনবাড়ী উপজেলা। কয়েক বছর আগে জামাই বা নতুন আত্মীয় স্বজন আসলে পায়েস বা পিঠা তৈরির ধুম পড়ত গ্রামের বাড়িতে। এমন কি ঢেঁকির শব্দ শুনলে আমরা বুঝতে পারতাম ঐ বাড়িতে আত্মীয় স্বজন এসেছে। কিন্তু আজ এ সকল ধুমধাম শব্দ বা পিঠা উৎসব হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলা থেকে এ ঢেঁকির কারণে।
 
জামালের মা আয়েশা ও জাহেদা বেগম বলেন, আমরা দুজনে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ঢেঁকির মাধ্যমে চাল তৈরি করতাম। এক মন ধান ঢেঁকির মাধ্যমে মাড়াই করলে আমাদের দু’জনকে ২ কেজি চাল দিত তবে বর্তমান সময়ের চাল আর আগের দিনের ঢেঁকির তৈরি চাল আকাশ পাতাল ব্যবধান। ঢেঁকির স্থান দখল করে নিয়েছে রাইস মেইল গুলো। 

মুশুদ্দি ইউনিয়নের মুশুদ্দি পশ্চিম বারা খালপাড়া গ্রামের জলিল  বলেন, আগে পৌষ মাসে আমাদের এলাকায় পিঠা তৈরির হিড়িক পড়তো আজ তা চোখে পড়ে না। আমাদের মা চাচীরা এক সঙ্গে ১০/১২ মন ধান এক সঙ্গে ঢেঁকির মাধ্যমে চাল তৈরি করত। যারা ঢেঁকির মাধ্যমে চাল তৈরি করে দিতো তাদের দিতে হতো মন প্রতি ২ কেজি চাল। সময়ের প্রবাহে আমাদের সেই ঐতিহ্যবাহী ‘ঢেঁকি’ যেন  আজ হারিয়ে যাচ্ছে।

ধনবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিলন বলেন, টাংগাইলে ধনবাড়ী  উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কালের বির্বতনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এক সময়ের ধান চাল ভাঙ্গার একমাত্র অবলম্বন ঢেঁকি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না।

কেকে/এমএস
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

অসহায় বৃদ্ধার পাশে দাড়ালেন ইউএনও আলীমুজ্জামান
বিএনপির ৩১ দফার মাধ্যমে দেশকে নতুনভাবে সাজাতে হবে
সিরাজগঞ্জে আইনজীবী সমিতিতে বিএনপি-জামায়াতপন্থী প্যানেল বিজয়ী
রাতের ভোটের কুশীলবদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা

সর্বাধিক পঠিত

গোয়াইনঘাটে কৃষি জমি রক্ষায় খাল খনন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমালে হতে পারে যেসব ক্ষতি
শিশুরাও ছিল হাসিনার আয়নাঘরে, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ
সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
শেরপুরে তারুণ্য মেলা অনুষ্ঠিত

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝