শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীহলসংলগ্ন নিউজিল্যান্ড টিলার পাদদেশে গড়ে তোলা হচ্ছে ময়লা ফেলার নতুন ভাগাড়। ময়লা ফেলার ওই স্থানটিতে নিয়মিত বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন শিক্ষার্থীরা। ফলে স্থানটিতে ময়লার ভাগাড় গড়ে তোলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে সরিজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েকদিন ছাত্রী হলসংলগ্ন টিলার পাদদেশের ফাঁকা জায়গায় ময়লা ফেলে ভাগাড় তৈরি হয়েছে ও বিভিন্ন বর্জ্য রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে অপচনশীল বর্জ্য পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্যও দেখা যায়। চারদিকে অনেক দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসূত্রে জানা যায়, ‘নতুন একটি ছাত্রী হলের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। তাই বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের বর্জ্যগুলো পূর্বে যে জায়গায় রাখা হতো তা সেখানে না রাখতে বলা হয়েছে। আপাতত ওই দুই হলের বর্জ্যগুলো ‘আপাতত’ টিলার পাদদেশে রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে বাকি হলগুলোর ময়লা সিটি করপোরেশনের গাড়ি এসে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই দুই হলের ময়লা ফেলে যে জায়গায় স্তূপ করা হচ্ছে সেখানে সিটির করপোরেশনের গাড়িও যেতে পারবে না।’
এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটির সভাপতি রমজান হোসেন রনি বলেন, ‘আমি একদিন গিয়েছিলাম ময়লার ভাগাড়ের দিকে। সেখানে অপচনশীল বর্জ্যের পরিমাণ বেশি দেখা গেছে। গর্ত করেও পচনশীল বর্জ্যগুলোও রাখতে পারেন। অপচনশীল বর্জ্যগুলো একদম এখানে ফেলানো ঠিক না। কিন্তু যে জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে সেখানে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত রয়েছে। তাঁরা এর পাশেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের সাথে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কথা বলা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও শিগগিরই কথা বলব।’
শিক্ষার্থীরা বলছেন, টিলায় শিক্ষার্থীরা ছুটির দিনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে টিলাতে ব্যাচমেটরা মিলে বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এখন টিলার চারপাশে ময়লার ভাগাড় থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অনেকেই। মিসবাউর রহমান জাহিদ নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, ‘নিউজল্যান্ড যাওয়ার রাস্তায় ময়লার ভাগাড় কেনো? প্রশাসন কি ঘুমায়?’ একইধরনের আরেকটি পোস্টের মন্তব্যে মাহিম শাফায়েত নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘পুরো সিলেট সিটির (ময়লা) গুলো আনার দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. এছাক মিয়া বলেন, ‘ছাত্রীদের জন্য নতুন ১০তলা বিশিষ্ট আবাসিক হল নিমার্ণ কাজের স্বার্থে পূর্বের ময়লা ফেলার স্থানটি দিয়ে রাস্তা তৈরীর কাজ চলছে। ফলে নিকটবর্তী দুই ছাত্রীহলের ময়লা ফেলার জন্য আপাতত ওই স্থানটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ যাতে এই ময়লাগুলো নিয়ে যায় সে ব্যাপারে তাদের সাথে কথা হয়েছে।’
কেকে/ এমএস