যাতায়াত ব্যবস্থা আর একছাঁদে কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলছে বিআরটিসির বিশেষ শাটল বাস। কুড়িল বিশ্বরোড, খেজুরবাগান (ফার্মগেট), নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে এগুলো ছাড়ছে। নির্দিষ্ট রুটগুলোয় যাত্রীদের আবার পৌঁছে দিচ্ছে এসব বাস। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ভাড়া ৩৫ টাকা। খেজুরবাগান (ফার্মগেট) থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ৭০ টাকা। নারায়ণগঞ্জ থেকে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০ টাকা। নরসিংদী থেকে ৯০ টাকা। ঢাকা বাইপাস সড়কে কাঞ্চন ব্রিজ থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত কিছুটা যানজট থাকলেও বাকি সব সড়ক আরামদায়ক ভ্রমণের উপযোগী।
২৯ তম আসরের ২২ জানুয়ারী বুধবার মেলা ঘুরে দেখা যায় প্রতিবারের মতো দেশীয় জামদানি, মণিপুরি ও রাজশাহী সিল্কের শাড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছে কয়েকটি স্টল। সরকারি তত্ত্বাবধানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্যাভিলিয়ন এবং বিসিকের আওতাভুক্ত এসএমই ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন স্টলে গিয়ে চোখ আটকে গেল। নানা রকম চিনামাটির গয়না, শাড়ি, কুর্তা, ঘর সাজানোর জিনিস, শতরঞ্জি, খেলনা, জুতা, খাদ্যদ্রব্য, পাটের সামগ্রী, নকশিকাঁথা, ব্যাগসহ দেশীয় জিনিস আছে। দেশীয় পণ্যের দোকানগুলোয় দর্শনার্থীদের বেশ ভিড় দেখা গেল। জয়িতা ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়া সুইটস, অগ্রজ, ক্লে ইমেজ, ব্যাগ বাজার, দেশি, পিপলস ফুটওয়্যার, প্রকৃতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য নিয়ে মেলায় এসেছে। রিবানার স্টলে রূপচর্চার সামগ্রী চোখে পড়ল। নুরুল টেক্সটাইলে মিলবে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর তাঁতে বোনা গামছা, রুমাল, বিছানার চাদর, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন পণ্য।
আবার প্রতিবারের মতো এবারও ভারতীয় স্টলগুলোয় মিলছে কাশ্মীরি শাল, ভিন্ন ছাঁটের ফ্যাশনেবল পঞ্চ, মাফলার, ওয়ান–পিস, থ্রি–পিস প্রভৃতি। ভেলভেট ও কারচুপির কাজ করা কুশনকভার ও টেবিলরানারগুলো বেশ নজর কাড়ছে। জয়পুরী স্টলগুলোয় বিছানার চাদর, ব্যাগ ও জুতার দোকানে দেখা গেল উপচে পড়া ভিড়। জুতার মধ্যে নাগরা, জুত্তি, চপ্পল ও স্যান্ডেল থাকলেও ভারী কাজ করা জুতা এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। অনেকে বানজারা ব্যাগ ও মেটাল ব্যাগও কিনছিলেন। স্টিলের বাসনকোসনের জন্য আছে দিল্লি অ্যালুমিনিয়ামস।
মেলায় ছেলেদের শার্ট, কোট, ব্লেজার, স্যুট ও প্রিন্স কোটের কয়েকটি স্টল দেখা গেল। বিশেষ মূল্যছাড়ের কারণে ক্রেতারা পছন্দের পোশাকটি লুফে নিচ্ছেন। শিশুদের খেলনার স্টলেরও অভাব নেই। তাদের মনোরঞ্জনের জন্য বিভিন্ন স্টলে নানা কার্টুন ও মজার চরিত্রের মানবপুতুলও রাখা হয়েছে।
বিক্রেতা হাজিদুর রহমান জানান, নারীরাই বেশি কেনাকাটা করতে আসছেন। দেশি ও বিদেশি প্যাভিলিয়ন বাদে গয়না, মেকআপের সামগ্রী, মাথার কাঁটা, ক্লিপ, খোঁপা, কোরিয়ান ও চীন থেকে অনুপ্রাণিত পণ্য, চাবির রিং, আয়নাসহ সব ধরনের জিনিস কিনছেন। কয়েকটি দোকানে দেখা গেল নামীদামি ব্র্যান্ডের সুগন্ধির রেপ্লিকা। আছে আতরের স্টলও।
মেলার পরিচালক ইপিবি সচীব বিবেক সরকার বলেন, মেলাকে উৎসবের স্থান দিতে পন্য প্রদশর্নের আর ক্রেতা বিক্রেতার মেলবন্ধনের আয়োজন করেছি। সুতরাং এতে আমরা সফল।
কেকে/ এমএস