রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদকে লাঠিসোটা ও রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাতে দিকে নগরীর ষষ্ঠিতলা এলাকার এক ছাত্রাবাসে তার ওপর এই হামলা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেছে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন।
নুরুল ইসলাম শহীদ গত জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে আন্দোলনের সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি রাবির ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের লেভেল-২ এর দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে। চার বছর ধরে তিনি নগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকার ‘কিউট ছাত্রাবাস’-এ থাকেন।
আহত সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তিনি ছাত্রাবাসে তার কক্ষে বসে ভাত খাচ্ছিলেন। তখন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ছাত্রাবাসে এসে প্রতিটি কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে কাউকে খুঁজতে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ছাত্রাবাসে বাইরে থেকে এক ব্যক্তি এসে ঢুকে লুকিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকেই খোঁজা হচ্ছে। তিনি বের হয়ে নিজেও খুঁজতে শুরু করেন। এরপর চারতলার রান্নাঘরে শামিম নামের ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। যারা শামিমকে খুঁজতে এসেছিলেন তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করার জন্য তাদেরকে ডাকছিলেন তিনি। এরইমধ্যে ছাত্রাবাসে ঢুকে পড়েন শামিমের পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন। তারা কোনোকিছু না শুনেই সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম ও ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীনকে মারধর শুরু করেন।
সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ জানান, তাকে রড ও লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করা হয়েছে। বহিরাগত ব্যক্তিরা মারধর করে চলে যাওয়ার পর তিনি চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। রডের আঘাতে হাত ভেঙে গিয়েছে বলে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন। তবে এক্স-রে করে দেখেছেন, হাত ভাঙেনি। তাই হাসপাতাল থেকে চলে এসেছেন। এখনও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। পরিবার ও বড় ভাইদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, হৃদয় ও মোস্তাক মিল্টন নামের দুই তরুণের মধ্যে প্রেমঘটিত বিষয়ে দ্বন্দ্ব আছে। মঙ্গলবার রাতে হৃদয় ষষ্ঠিতলা এলাকায় মিল্টনকে ধরে আনে। সেখানে হৃদয়ের দুলাভাই শামিমও আসে। খবর পেয়ে মিল্টনের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়।
এ সময় শামিম গিয়ে ওই ছাত্রাবাসে লুকিয়ে পড়ে। পরে শামিমের লোকজন তাকে উদ্ধার করতে ছাত্রাবাসে ঢুকে দেখে সমন্বয়ক নুরুলের কাছে শামিম। নুরুলই তাকে আটকে রেখেছেন, এই ধারণা করে তাকে মারধর করা হয়েছে। আসলে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এটা হয়েছে।
ওসি বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। নুরুল চাইলে মামলা করতে পারেন। মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এএম