সিলেট নগরীর সাগরদিঘিরপাড় এলাকায় সরকারি জায়গা দখল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বাদ জুমা কয়েক দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এসময় ৪টি মোটরসাইকেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি তাজা হাতবোমা উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসটিএস গ্রুপ নামে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিলেট সাগরদিঘীরপাড়ের মৎস্য ভবনের পার্শ্ববর্তী সরকারি জায়গা দখল করে রেখেছিলো। দখলবাজরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলো বলে জানা যায়। তবে, ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর সেই জায়গা দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে। পরে সেখানে তিনি ‘ড্রিম সিটি’ নাম দিয়ে আবাসন প্রকল্প শুরু করেন এবং ‘ড্রিম টাওয়ার’ নামে ভবন নির্মাণ শুরু করেন।
সেই জায়গা ও নির্মাণাধীন ভবন এবার জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় এক নেতা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে জায়গা দখল করতে শতাধিক লোক ডেকে পাঠান ওই জাপা নেতা। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার অনুসারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আগনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় ৪টি মোটরসাইকেল।
সংঘর্ষের সময় ফরহাদ মিয়া নামে এক পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ আহত হয়েছেন। তাকে সিলেট বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবে পেয়ে পুলিশ এসে ধাওয়া দিয়ে দুপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে তাজা কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক দিন আগে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে অপহরণের পরে সেই স্থানে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়। এছাড়া একই সময়ে এ স্থানেই গণধর্ষণ করা হয় এক নারীকে। এ ঘটনায় পরে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খোলা কাগজকে বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ের করে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি তাজা ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে কেউ অভিযোগ বা মামলা দায়ের করলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এআর