প্রকাশ: শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:০২ পিএম আপডেট: ২৫.০১.২০২৫ ২:২৭ পিএম (ভিজিটর : ১০০)
ছবি: খোলা কাগজ
সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াত ও রাত্রিযাপনে সীমাবদ্ধতা আরোপের সিদ্ধান্তে পর্যটনশিল্পে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের নেতারা এই দাবি তুলে ধরেন।
জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি জানান, ‘সরকারের নেওয়া সীমাবদ্ধতামূলক সিদ্ধান্তে হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা বেকার হয়ে পড়েছেন। হোটেল, রিসোর্ট, পর্যটন পরিবহন, মাছ ধরা ও অন্যান্য সেক্টরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীরা জীবিকা নিয়ে সংকটে পড়েছেন।’
পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল এই দ্বীপে আর্থিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে জানিয়ে শিবলুল আজম কোরেশি সম্মেলনে আরো বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রী, স্থানীয় জনগণ, দিনমজুর, কুলি, শ্রমিক, মৎসজীবি, চাকুরীজীবি, তরুণ উদ্যোক্তা, পর্যটন ব্যবসায়ী, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী, হোটেল-রিসোর্ট মালিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সরকার সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং রাত্রি যাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এখানে আর্থিক সংকট ও অভাব দেখা দিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পড়ালেখা ও ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অসংখ্য চাকুরীজীবি বেকার হয়ে পড়েছে। উদ্যোক্তারা পথে বসে গেছে। হোটেল-রিসোর্ট মালিকদের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় জনজীবনের ব্যাপক ক্ষতি ও মানবিক সংকটের কথা বিবেচনায় ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’
সভায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলসদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যটন যাতায়াত করে থাকে, কিন্ত এ বছর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের থেকে পর্যটন সীমিতকরণের আদেশ জারি করে। আদেশে বলা হয় নভেম্বর মাসে পর্যটকগণ সেন্টমার্টিন যেতে পারবে কিন্ত রাত্রি যাপন করতে পারবে না। ডিসেম্বর ২০২৪ ও জানুয়ারি ২০২৫-এ ২০০০ পর্যটক যেতে পারবে ও রাত্রি যাপন করতে পারবে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকগণ সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন না। কিন্তু যথাযথ সময়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়াতে নভেম্বর ২০২৪-এ একজন পর্যটকও সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি। ১ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি হলেও ট্রাভেল পাস সংগ্রহের আতঙ্কে পর্যাপ্ত সংখ্যক পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি। যার কারণে শতভাগ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল সেন্টমার্টিনবাসী এবং পর্যটন ব্যাবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে ২ মাসের আয় দিয়ে সেন্টমার্টিনবাসীর ১২ মাস চলা সম্ভব নয়। মানবিক বিবেচনায় পর্যটকদের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মতবিনিময় সভায় টুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টোয়াব), ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনস দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতি, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন, ই-ট্যুরিজম এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ই-ট্যাব), সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতি, বোট মালিক সমবায় সমিতি, মৎসজীবি মালিক সমিতি, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতি, জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (স্কুয়াব)-এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
কেকে/ এমএস