দেশে ১৫০ টাকা মূল্যের প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল এবং প্লাস্টিকের পাদুকার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীরা ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেন।
তারা বলেন, ১৫০ টাকা দামের প্লাস্টিক ও রাবারের পাদুকার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বসলে তাতে এসব পাদুকার দাম বাড়বে, যার ভুক্তভোগী হবেন গ্রাম থেকে শহরের একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষ। এ ছাড়া এ ধরনের পাদুকা তৈরির সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির সহসভাপতি আশরাফ উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিক ও রাবাবের তৈরি ১৫০ টাকা বা তার কম দামের হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার ওপর ২০২৪ সালের ২৭ মে থেকে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দিয়ে আসছিল সরকার। কিন্তু ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন এক আদেশে সেই সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে কম দামি এসব হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর দাম বাড়লে নিম্ন আয়ের মানুষ এসব পাদুকা ও হাওয়াই চপ্পল পরা কমিয়ে দেবেন। তাতে অনেক কারখানার উৎপাদন কমবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো বেশি সমস্যায় পড়বে। আর সেটি হলে অনেক মানুষ কর্মসংস্থান হারাবেন।
মূল্যবৃদ্ধির কারণে কম দামি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার বিক্রি কমে গেলে তা পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ ধরনের চপ্পল ও পাদুকা তৈরিতে কারখানাগুলো মূলত পুরোনো চপ্পল ও পাদুকাকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে। পুনরুৎপাদন বা রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমেই এসব কারখানা চলে। কারখানার সংখ্যা বা হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার বিক্রি কমে গেলে তাতে রিসাইক্লিংও কমে যাবে। তখন গ্রাম থেকে শহরে রাস্তাঘাটে ব্যবহারের অনুপযোগী হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকা পড়ে থাকবে। এসব সামগ্রী পচনশীল নয়। এর ফলে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
সমিতির সহসভাপতি আশরাফ উদ্দিন বলেন, এখন যে রাস্তাঘাটে রাবার ও প্লাস্টিকের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকা খুব বেশি পড়ে থাকতে দেখা যায় না, তার বড় অবদান এ খাতের পাঁচ শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার। দেশজুড়ে এ ধরনের কারখানা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তিনি জানান, বর্তমানে পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির সদস্যসংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচশ। এসব কারখানা বছরে কয়েক কোটি জোড়া কম দামি চপ্পল ও পাদুকা তৈরি করে। স্থানীয়ভাবে অনেক মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি ১৫০ টাকা পর্যন্ত হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। তাই এ খাতে ভ্যাট অব্যাহতির আগের সুবিধা পুনবর্হালের দাবি জানিয়েছেন সমিতির নেতারা। দাবি পূরণ না হলে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেওয়া হয়।
কেকে/এজে