চলছে মাঘ মাস। কথায় আছে মাঘের শীতে বাঘে কাপে কথাটি কথিত হলেও এবারের শীতের দাপটে কাপছে মানুষ। সকাল হলেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারিদিক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কুয়াশা। শীতল আবহাওয়া জনিত কারণে মাগুরার শালিখায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। নিউমোনিয়া, এ্যাজমা, জ্বর, কাশি, ঠান্ডা, ডায়রিয়াসহ নানাবিধ সিজোনাল রোগে ভুগছেন শিশু, বয়স্কসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তবে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এমন পরিস্থিতিতে শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঠান্ডা জনিত রোগের ঔষুধ স্বল্পতা ভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে।
শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেওয়া এক তথ্য থেকে জানা যায়, সরকারি সেবা কেন্দ্রগুলোতে এ্যন্টি বায়োটিক ও গাসের ওষুধ থাকলেও প্যারাসিটামল, এন্টিহিস্টামিনসহ ঠান্ডা জনিত রোগের ঔষধ না থাকায় বেসরকারি ফার্মেসির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে রোগীদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আব্বাচ উদ্দিন বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে প্যারাসিটামল ও এ্যন্টি হিস্টামিন ঔষধের সরবরাহ না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের।
সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য রোগীর চেয়ে বমি, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কেউ ওয়ার্ডগুলোর বেডে চিকিৎসাধীন কেউ করিডোরে। রোগীর চাপ বেশি থাকায় হাসপাতালের বারান্দাতেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা মোতালেব নামে এক বৃদ্ধের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে জ্বরে ভুগছি। জ্বর মাঝে চলে যাচ্ছে আবার ফিরে আসছে ফলে বাধ্য হয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি এখন মোটামুটি সুস্থ্য।
চিকিৎসা নিতে আসা শালিখা ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের তাসনীম জান্নাত নামে দুই বছরের এক শিশুর মা সোহানা খাতুন ইতির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মেয়েটা আজ দুই দিন ধরে বমি ও পাতলা পায়খানা করছে তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি এখন একটু সুস্থ।
একই ইউনিয়নের হাজরাহাটি গ্রামের আব তালহা নামে শিশুর মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ছেলেটা সকাল থেকে কাঁশি দিচ্ছে সাথছ বমি করছে তাই হাসপাতালে এসেছি। হরিশপুর গ্রামের আক্কাস আলী জানান, আজ দুই তিন ধরে শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। মাঝে বাড়ছে আবার কমছে তাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি এখন অনেকটাই সুস্থ্য ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইমুন নেছা বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ জন শিশু ও ৫-৬ জন বয়স্ক মানুষ ঠান্ডা জনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন যাদের অধিকাংশই জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, এ্যাজমা , ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। বয়স্কদের চেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানান তিনি। সিজোনাল এই সমস্যায় স্বাভাবিক প্যারাসিটামল ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে এবং একটূ সচেতন থাকলেই এগুলো ঠিক হয়ে যাবে এনিয়ে ভয়ের কিছু নেই।’
কেকে/এমএস