সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানু ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাসা দখল, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন জেলার গোলাপগঞ্জের লক্ষ্মীপাশার মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে লোকমান হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে লোকমান জানান, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নই। শিক্ষানবীশ আইনজীবী হিসেবে কাজের পাশাপাশি আমার বড় ভাই ফটিক মিয়ার ব্যবসা দেখা শোনা করি। আমি বিনা অপরাধে দীর্ঘ ২ মাস ১০ দিন কারাবরণ করেছি। কারাগারে যাওয়ার পর আমাকে যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে প্রচার করতে পুরো নগরীতে পোস্টারিং করা হয়। এটি করেছেন সিলেটের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেত্রী শাহানা বেগম শানু, তার ভাসুর মো. নুরুল ইসলাম, ভাই বেলাল আহমদ, ছেলে ছাত্রলীগের পদধারী নেতা রায়হান, রেদওয়ান, ছেলের বন্ধু রিপন তালুকদার ও রাজন আহমদ আরিয়ান।
শানু, তার ছেলে, ভাসুরের বিরুদ্ধে সিলেটের একাধিক থানায় হত্যা, বিস্ফোরক ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। ছেলে রায়হান ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে অংশ নেয়। ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে শানুর আরেক ছেলে রেদোয়ান অপরাধের রাজ্য গড়ে তুলেছে। শানুর স্বামী সিলেটের শীর্ষ চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী তাজুল ইসলামকে জনতা গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। একই অপরাধে তার আরেক ছেলেকে হত্যা করে জনতা।
তিনি জানান, শানু গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে অর্থের বিনিময়ে আমাকে ৩টি রাজনৈতিক মামলায় জড়ায়। মামলার বাদীদের আমি নিজেও চিনি না। বাদীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে চেনেন না বলে জানান।
লোকমান হোসেন জানান, নগরীর খুলিয়াটুলায় নীলিমা আবাসিক এলাকার ৫২/৫ নং বাসাটি ক্রয় সূত্রে মালিক আমি। আমি মৃত মুকিত মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলামের মাধ্যমে মৃত নুরুল হুদা চৌধুরীর পুত্র তারেকুল হুদা চৌধুরী গংদের কাছ থেকে বাসাটি ক্রয় করি। নুরুল ইসলামের সাথে ২০২১ সালে ভূমি বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন করে ৩৮ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। নুরুল ইসলাম উক্ত টাকার মধ্যে ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা এসএ রেকর্ডীয় মালিক গোলাম সরোয়ার চৌধুরী, মোহাম্মদ বক্স চৌধুরী ও সাহাদত বক্ত চৌধুরীর উত্তরাধিকারী ৫ জনকে পরিশোধ করে এবং আমি ও আমার ভাই একই বছরের ১৮ আগস্ট এস.এ রেকর্ডীয় মালিকদের কাছ থেকে সাফকবালা দলিল সম্পাদন করে বাসাটি ক্রয় করি। এছাড়া শানুকে ২৪ লাখ টাকা পরিশোধ করে তার সাথে বিগত ২০২১ সালের ১৯ জুলাই ভূমি বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন করি। অপর দখলকার মো. রকিবের সাথে বিগত একই বছরের ৪ জুন এক চুক্তিপত্র সম্পাদন করে তাকে ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করি। এভাবে, আমি মোট ৭৪ লাখ টাকা সকল পক্ষকে পরিশোধ করি। বাসার দামের অতিরিক্ত ৯ লাখ টাকা নুরুল ইসলাম আমার কাছ থেকে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে এবং সেই বাবত আমাকে ৯ লাখ টাকার ৩টি চেক প্রদান করে।
তিনি অভিযোগ করেন, শানু ও তার লোকজন গত ৬ আগস্ট অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই বাসায় থাকা ভাড়াটেদেরকে বের করে দেয় এবং বাসাটি দখল করে। এমনকি বাসার ভাড়াটেদের মালামালগুলোও তারা আটকে রাখে। পরবর্তীতে গত ১০ জানুয়ারি তারা আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এসে আমার নিকট ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই অপরাধ চক্রের নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
কেকে/এইচএস