জমিদারদের স্মৃতির সাক্ষী বাড়িগুলো দেখে একদিকে যেমন তাদের শৌর্যবীর্য ও তাদের নিজেদের সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, অন্যদিকে ঐতিহ্যের অতল থেকে ঘুরে আসা যায় নিমিষেই। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার অনেক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। সেই জমিদার বাড়ির সাথে হারিয়ে যাচ্ছে তার ইতিহাসও।
অতীতে সমস্ত জমিদার বাড়িই ছিল কম বেশি জাঁকজমকপূর্ণ, এরকমই একটি উনিশ শতকের শেষভাগে নির্মিত ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরের উজানচর ইউনিয়নের উজানচর জমিদার বাড়ি, এটি ভগবান চন্দ্র রায়ের জমিদার বাড়ি নামেও পরিচিত। ব্যবসা বাণিজ্য ছিল ভগবান রায়দের প্রধান পেশা, ব্যবসা বাণিজ্য করে অনেক অর্থ সম্পদের মালিক হন। এরপর তারা জমিদারি কিনেন। কলকাতার বড় বাজারে তাদের সূতার বাণিজ্য ছিল।
এ অঞ্চলের জমিদারির গোড়া পত্তন করেন জমিদার ভগবান চন্দ্র রায়, কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে বাড়ির জৌলুস, সেই জমিদারি নাই কিন্তু এখনও জমিদারদের স্মৃতি স্বরুপ টিকে আছে জমিদার বাড়িটি।
পাশেই রয়েছে উজানচর কালী মন্দির, যা ১৯০৫ সালে জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত উজানচর কে.এন. স্কুল (কংস নারায়ন) পরবর্তী সময়ে এটি হাই স্কুল ও কলেজে উন্নতি করা হয়, বর্তমানে এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠের নাম উজানচর কে এন স্কুল এন্ড কলেজ।
বর্তমানে এই বাড়িতে দাড়িকানাথ রায়ের বংশধরগণ বসবাস করেন। দাড়িকানাথ রায়ের ছেলে সুরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলেরা এই বাড়িতে থাকেন। দাড়িকানাথ রায়ের বাবার নাম হলো রাজারাম রায়, ভগবান রায়ের বাবার নাম কাশিরাম রায়। কাশিরাম এবং রাজারাম হলো আপন ভাই তাদের বাবার নাম হলো কংসনারায়ণ।
৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে তারা বাড়ির কিছু অংশ বিক্রি করে দেন আর বেশ কিছু অংশে তারা পরিবার সহ বসবাস করছেন। বর্তমানে বাড়িটির বেহাল দশা, দেয়াল জুড়ে পরগাছাদের বসবাস, অনেক জায়গায় পলেস্তারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।দেয়ালে আকা বিভিন্ন দেব দেবীদের মূর্তি নষ্ট হচ্ছে, দেয়াল জুড়ে বিভিন্ন কারুকার্য ছিলো যা আজ অস্তিত্বের সংকটে। যেই বাড়ির ঠাকুর ঘরে সন্ধ্যা হলেই উলুধ্বনি হত সেখানে এখন ভৌতিক এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
কেকে/এজে